Hanuman Chalisa Chaupai 40 Meaning in Bengali

Many people believe that regular recitation of Hanuman Chalisa in English brings inner peace.

Hanuman Chalisa Chaupai 40 in Bengali with Meaning & Analysis

তুলসীদাস সদা হরি চেরা।
কীজৈ নাথ হৃদয় মহঁ ডেরা।

সারানুবাদ : তুলসীদাস সদাই আপনার সেবক হন। আপনি আমার হৃদঢ়ে বাস করুন।

ব্যাখ্যা : অন্তিম চৌপাঈঢে গোস্বামীজী ভাববিহুল হढ ঢাঁর মনের অস্তঃস্থলের অস্তরতম ইচ্ছাকে ব্যক্ত করছেন। তিনি সরাসরি প্রভুকে তাঁর হৃদয়ে এসে বাস করতে বলছেন। সাধারণত সাধক ও ভক্তরা প্রভুর পরমধামে নিত্য বিরাজ করার অভিলাষ রাখেন। অনেক ভক্ত প্রভুর চরণরজ নিত্য-প্রাপ্তির কামনা করেন।

প্রভুপ্রেমের উচ্চ অবস্থায় অহৈতুকী কৃপায় প্রভু পরম আনন্দে এই সব ভক্তের মনোবাসনা পূর্ণ করেন। কিন্তু গোস্বামীজী প্রভুকেই ভাই লক্ষ্মণ, মাতা সীতা ও শ্রীহনুমানজীর সঙ্গে তাঁর হৃদয়ে সদা অবস্থান করার প্রার্থনা জানাচ্ছেন। (চালীসার অন্তিম দোহায় এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা আছে)। এই প্রার্থনা ভক্তপ্রেমের এক অতি উচ্চতম অবস্থার পরিচায়ক।

প্রশ্ন উঠঢে পারে তুলসীদাসজী এই প্রার্থনা কি কেবল নিজের জন্য করলেন ? কখনই নয়। বস্তুত তিনি সাধনমার্গের সবাইকে স্মরণ করাচ্ছেন যে তাঁরা মূলতঃ অনাদিকাল থেকে ভগবানের নিত্য দাস, তাঁর তটস্থ শক্তি, তাঁর বিভুচচেতন্যের অংশ অণুচেতন্য। তিনি এই কথা আধ্যাত্মিক মার্গের সবাইকে সর্বদা সমরণে রাখতে বলছেন। তিনি এই মার্গের পথিকদের আরো স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে, প্রভুর কাছে কোতো প্রার্থনা না করাই সর্বশ্রেষ্ঠ সাধনা, কারণ তিনি অন্তর্যামী হবার কারণে হৃদয়ের গভীর থেকে গভীরতম কোণে থাকা ইচ্ছাও জানেন।

নিক্ষাম সাধনাই শ্রেষ্ঠ সাধনা। কিন্ত জন্ম-জন্মাস্তরের দেহাত্ববোধ ও লৌকিক কামনা সাধককে পরমার্থিক যাত্রায়, না চাইলেও নিষ্কাম সাধন করতে দেয় না। গোস্বামীজী এখানে জোরের সঙ্গে জানাচ্ছেন যে কামনাই যদি করতে হয় তাহলে সেই উচ্চত্ম কামনাই প্রভুর কাছে করা উচিত যা তিনি নিজ্রের মধ্যেও জমিয়ে রেখেছেন অর্থাৎ ‘কীঁজ নাথ হৃদয় মইঁ ডেরা’।

আবার প্রশ্ন উঠতে পারে এই প্রার্থনার সঙ্গে ‘হনুমান চালীসা’র কোনো যোগ আছে? উত্তর হলো অবশ্য আছে। এই দুটি যার স্মরণ-মনটে থাকবে (১) ‘সদা হরি চেরা’; (২) কীজৈ নাথ रৃদয় মহঁ ডেরা’ ; তিনি অবশ্যই সাত্ত্বিক ভাবের অধিকারী হবেন এবং তার ‘হনুমান চালীসা’ পাঠ, শ্রীহনুমানজীর কৃপাকে অবশ্যই দ্রুত নামিয়ে আনবে এবং তাঁর মনের সব ইচ্ছা অবশ্যই পূর্ণ হবে।

Hanuman Chalisa Chaupai 39 Meaning in Bengali

Hanuman Chalisa Chaupai 39 Meaning in Bengali

Hanuman Chalisa Pdf is a timeless prayer that inspires unwavering faith in Lord Hanuman.

Hanuman Chalisa Chaupai 39 in Bengali with Meaning & Analysis

জো য়হ পঢ়ে হনুমান চালীসা।
হোয় সিদ্ধি সাখী ণৌীরীস।।

সারানুবাদ : যে এই হনুমান চালীসার পাঠ করবে, সে-ই সিদ্ধিপ্রাপ্ত হবে। ভগবান শংকর এর সাক্ষী।

ব্যাখ্যা : হনুমান চালীসা পাঠের মহিমা বর্ণনার ক্রমে আগের চৌপাঈ (৩৮নং) এর পর গোস্বামীজী দৃঢ়তার সঙ্গে আবার স্মরণ করাচ্ছেন-

(১) শ্রীহনুমান চালীসার পাঠ দ্বারা আমরা শ্রীহনুমানজীকে ঢাঁর কীর্তি, গুণ আর বলের স্মরণ করাই (যা তিনি ঋষি ভৃগু ও ঋষি অঙ্গীরার শিষ্যদের দেওয়া অভিশাপে বাল্যাবস্থায় ভুলে গিয়েছিলেন)। যার ফলে শ্রীহনুমানজী তাঁর নিজের স্বরূপ প্রাপ্ত হন, তাঁর পরাক্রম ফিরে আসে এবং আমাদেরও কার্য সিদ্ধ হয়।

  • শ্রীহনুমানজীর কৃপায় সর্বসিদ্ধি প্রাপ্ত হওয়া যায়, যেমন-
  • লোকিক সিদ্ধি,
  • ভক্তিমার্গের সিদ্ধি,
  • বৈরাগ্য সিদ্ধি,
  • জ্ঞান সিদ্ধি ইত্যাদি।

গোস্বামীজী বলছেন, ‘পুরুষার্থ’ করার পরও যার সফলতা আসে না এবং জীবনে চারদিক থেকে নিরাশা চেপে বসে, তিনিও যদি শ্রীহনুমান চালীসা পাঠ করেন, তবে ঢাঁর মনের ইচ্ছা পূর্ণ হতে পারে। প্রশ্ন উঠতে পারে ভাগ্যের লেখা কি শ্রীহনুমানজী পরিবর্তন করতে পারেন ? অবশ্যই পারেন কারণ ত্রিপুরারী ভগবান শিব ‘আগামী’কে পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখেন আর শ্রীহনুমানজী তো ঢাঁরই অবতার। সবচেয়ে বড় কথা ত্রিপুরারী নিজে তার সাক্রী হয়ে অবস্থান করছেন। মানব, এখন কোন সিদ্ধির কামনা করবেন লেটা ডাঁর নিজের বিষয়।

Hanuman Chalisa Chaupai 38 Meaning in Bengali

Hanuman Chalisa Chaupai 38 Meaning in Bengali

Devotees sing the Hanuman Chalisa Lyrics with devotion in temples and during religious gatherings.

Hanuman Chalisa Chaupai 38 in Bengali with Meaning & Analysis

জো শত বার পাঠ কর কোঈ।
ছূটহি বন্দি মহা সুখ হোঈ।

সারানুবাদ : যে এই চালীসা একশত বার পাঠ করবে, সে বন্ধন থেকে মুক্ত হবে এবং অত্যন্ত সুখী হবে।

ব্যাখ্যা : গোস্বামীজী চালীসা পাঠের মহিমা এই চৌপাঈ এবং এর পরের চৌপাঈতে কীর্তন করেছেন। প্রশ্ন উঠতে পারে এই ‘হনুমান চালীসা’ একশত বার পাঠ করলেই কি সত্যিকারের সুখ অর্থাৎ আধ্যাত্মিক আনন্দের সুখ এবং কঠিন সঙ্কট থেকে মুক্ত হওয়া যাবে? আরো প্রশ্ন হতে পারে ‘একশই’ কেন,

তার বেশি বা কম নয় কেন? সাংসারিক আকর্ষণে আসক্ত মানুষ যাদের ভৌতিক সুতোগ সুবিধা জোগাড় করতেই দিন পার হয়ে যাচ্ছে, তাদের শ্রীহনুমানজীর ওপর শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস থাকলেও, অতবার পাঠ করার সময় যদি বার করতে না পারে, তাহলে তাদের সঙ্ষটমুক্তি এ আধ্যাছ্দিক আনন্দলাভের কি কোনো উপায় থাকবে না ?

শাস্ত্রকার ও কথাকারদের মত হলো এই ‘একশ’ শব্দ কেবলমাত্র ইঙ্গিতবাইী। এটা বলা এই কারণে যে, এই চালীসার ‘নিয়মিত’ পাঠ প্রয়োজন। যন্ত্রের মতো ‘একশ’ বার পাঠ করার কথা এই চোপাঈ বলছে না। পাঠ বা গান তখনই কার্যকরী হবে যখন শ্রীহুনুমানজীর প্রতি পূর্ণ প্রেম ও শ্রদ্ধা জাগরূক হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে উচ্চারণের দিকেও। প্রত্যেকটি চৌপাঈ-এর অন্তঃর্নিহিত অর্থ ও তার ভাব জানা অত্যন্ত জরুরি।

যদি কেউ অত্যন্ত ভাবপূর্ণ ও একাগ্রতার সঙ্গে পাঠ করেন এবং তা নিয়মিত করেন, তবে সংখ্যা কম-বেশি যাই হোক, সেই পাঠ শ্রীহনুমানজীর কৃপায় পাঠককে ধীরে ধীরে সাংসারিক আকর্ষণ ও ভোগবাদী বৃত্তিগুলির বন্ধন থেকে অবশ্যই মুক্ত করবে। শধু তাই নয়, শ্রীহনুমানজীর কিছু কিছু গুণ সেই পাঠকের মন ও বুদ্ধিকে প্রভাবিত করবে, যেমন তার মধ্যে বিচারশীলতা, নির্ণয়শক্তি ও মানসিক দৃত়তা আনবে। যার ফলে তার মধ্যে সৎকর্ম করার বা সৎসঙ্গে যুক্ত হবার প্রবণতা বাড়বে।

এই চালীসা পাঠ বার বার করার ইচ্ছা আপনা আপনিই জাগবে। এর ফল আরো ভালো হবে যদি তা অপরের কল্যাণ কামনায় করা হয়। প্রভু শ্রীরাম সর্বব্যাপক ‘বিষুণুস্বরূপ’। জগতের কল্যাণ কামনার অর্থে প্রভু শ্রীরামের কাজ করা বোঝায়। শ্রীহনুমানজী বিভীষণকে বলেছিলেন যে, খালি রামনাম করলেই হবে না, প্রভুর কাজও করতে হবে। রাবণ তাঁকে বিতাড়িত করতে পারেন এই আশঙ্কা সন্ত্বেও শ্রীহনুমানজীর এই পরামর্শ বিভীষণ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন।

রাবণের ভ্রুকুটী উপেস্মা করেও তিনি জনকনন্দিনী সীতাকে প্রভু শ্রীরামের কাছে ফিরিয়ে দিতে বলেছিলেন। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে ভৌতিক সুখ অল্প সময়ের জন্য হয় এবং এই সুখভোগ অনেক বন্ধনের কারণ হয়। কর্মাধীন জগত অমোঘ নিয়নে ‘…পুনরপী জনমং পুনরপী মরণং…’ চলতেই থাকে ও ভবিষ্যতে অনেক দুঃখ কষ্ট ভোগ করতে হয়, যা আমরা চাই বা না চাই।

তাই আতু-উপলক্ধি ও আত্ম-বিকাশের মার্গে চলা সাধক, ভক্ত, যোগী, কর্মী, জ্ঞানী, সবই আধ্যাছিক আনन्্স্বরূপ ‘মহাসুখ’ কামনা করে এবং ‘আবা-গমন’ থেকে মুক্ত হতে চায়। গোস্বামীজী তাই ‘হনুমান চালীসা’র মহিমা বর্ণনায় দৃত়তার সঙ্গে বলেছেন, ‘শ্রীহনুমান চালীসা’র নিয়মিত পাঠ পরিণামে ‘মহাসুখ’ অনুভব করায় এবং সব রকঙের বন্ধন থেকে মুক্ত করায়। গোস্বামীজীর নিজের জীবনেই একটি ঘটনা ঘটেছিল এবং তার থেকে এই পাঠের সিদ্ধান্ত তাঁর দৃঢ় হয়। ঘটনাটি সংক্ষেপে এই রকম-

একবার এক ব্রাহ্মণের অন্তিম যাত্রার প্রস্তুতি চলছিল। গোস্বামীজী ঘটনাক্রমে সেই স্থান দিয়ে পেরোচ্ছিলেন। হঠাৎ এক স্ত্রী তাঁর পা জড়িয়ে ধরে প্রার্থনা করলে, তিনি, না দেখেই, স্বাভাবিক ভাবে বলে উঠলেন, “অখণ সৌভাগ্যবতী হও।” তখন সেই মহিলা, যিনি সেই অন্তিমयত্রী ব্রাম্মাের স্ত্রী, বলে উঠলেন, “আপনার কথা ব্যর্থ। আমার স্বামী একটু আগেই মারা গেছেন এবং তাঁর অন্তিম যাত্রার প্রস্তুতি চলছে।”

গোস্বামীজী বলে উঠলেন, ” ‘মার মুখের শব্দ ব্যর্থ হওয়ার নয়। আমি তোমার পতিকে জীবিত করব।” গোস্বামীজী উপস্থিত সবাইকে চোখ বন্ধ করে শ্রদ্ধার সঙ্গে শ্রীরাম-নাম করতে বললেন। অত্যন্ত আশ্চর্যজনকভাবে উপস্থিত সবাই সেইই ব্রাঙ্মণকে প্রাণ ফিরে পেতে দেখল।

সেই সময়ের মোগল সম্রাট আকবরের কাছে এই খবর পৌছে গেল মন্ত্রী টোডরমল ও ভক্ত কবি রহিমের মাধ্যমে। বাদশাহ তুলসীদাসজীকে তাঁর দরবারে হাজির হতে বললেন। গোস্বামীজী সাহিত্যচর্চায় ব্যস্ত থাকার বারণে আমন্ত্রণ স্বীকার করলেন না। বাদশাহ আকবর তাঁর এই আচরণ ধৃষ্টতা ভেবে তাঁকে সৈন্য পাঠিয়ে ধরে এনে দরবারে কিছু ‘চমৎকার’ দেখাতে বললেন। গোস্বামীজী বললেন, “’আমি কোনো ‘চমৎকার’ করি না।

আমি শ্রীরামের ভক্ত মাত্র। এই সম্পূর্ণ লীলা এবং কৃপা আমার ইষ্টদেব শ্রীরামেরই।” বাদশাহ তখন তাচ্ছিলে্যের সঙ্গে বললেন, “তাই? ঠিক আছে। দেখি শ্রীরাম তোমার জন্য কি করেন!” এই কথা বলে গোস্বামীজীকে ফতেপুর সিকরীতে জেলে বন্দি করে রাখলেন। গোস্বামীজীও বাদশার কাছে না ঝুঁকে সেই জেলে বসেই ‘হনুমান চালীসা’ ক্রম্গাত চল্লিশ দিন পাঠ করলেন। এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটলো। হঠাৎ অসংখ্য বানর কোথা থেকে এসে সমস্ত নগরীকে তছনছ করতে লাগলো। সমস্ত নগরবাসী ও মোগল সৈন্য এই বানরদের পরাক্রনমের কাছে অসহায়

হয়ে বানরদের কাঞ্ডকারখানা দেখতে লাগলো। কোলো এক বৃদ্ধ হাফিজ্জ তখন আকবরকে জানালেন যে, কোলো ‘পবিত্র সন্ত’ কে আপনি বন্দি ক:রেছেন বলে এই ঘটনা ঘটছে। বাদশাহ তাঁর ভুল বুঝতে পেরে গোস্বামীজীকে মুক্ত করলেন এবং তাঁর কাছে ক্ষম্মা প্রার্থনা করলেন।

গোস্বামীজী বাইরে আসতেই সেই বানরকুল শান্ত হরলা এবং তারা স্থানত্যাগ করলো। তুলসীদাসজী যাবার আগে আকবরকে জানালেন যে, তিনি যেন ফতেপুর সিকরী ছেড়ে অন্যত্র তাঁর রাজধানী করেন। বাদশাহ তাঁর রাজধানী পরে দিল্লী সরিয়ে নেন। ‘Warrior Ascetics And Indian Empires’ এবং ‘Hanuman’s Tale : The Message Of A Divine Monkey’ নামক গ্রষ্থে এই ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়।

Hanuman Chalisa Chaupai 37 Meaning in Bengali

Hanuman Chalisa Chaupai 37 Meaning in Bengali

Each verse of the Hanuman Chalisa narrates an aspect of Hanuman’s divine qualities.

Hanuman Chalisa Chaupai 37 in Bengali with Meaning & Analysis

জৈ জৈ জৈ হনুমান গোসাঈ।
কৃপা করহু চরুদেব কী নাঈ।

সারানুবাদঃ হে গোস্বামী হনমান! আপনার জয় হোক, জয় হোক, জয় হোক। ওরুদেবের মতন কৃপা করুন।

ব্যাখ্যা : গোস্বামী তুলসীদাসজী হনুমান চালীসার একেবারে শেষে এসে উপস্থিত হয়েছেন। তিনি ‘চালীসা’ শুরু করেছিলেন শ্রীগুরুর চরণকমলের ‘রজঃ’ র বন্দনা দিয়ে আর এথন শেষ করছেন গুরুমহিমার ‘উদ্-ঘোষ’ দিয়ে। আমাদের শাস্ত্রীয় পরস্পরায় উপক্রম এবং উপসংহার সমানতাপুর্বক হওয়া উচিত এবং এখানে তাই হয়েছে।

শ্রীহনুমানজীর উদ্দেশে গোস্বামীজী তিনবার ‘জয় হোক’ ‘উদ্-ঘোষ’ করেছেন। আসলে চালীসার একদম শেষলগ্নে তিনি অত্যন্ত ভাব-বিহুল হয়ে পড়েছিলেন। আর হবেন নাই বা কেন, শ্রীহনুমানজীর উপস্থিতি ও আলিঙ্নের প্রতীক্ষারত গোস্বামীজী অঞ্র্পুর্ণ নয়নে তাঁর ভাবুক হৃদয়ের উথলে ওঠা ভাব থেকে বলে উঠলেন, “জয় হৌ! জয় হো! জয় হো!” ভক্তিমার্গের পথিকদের এই ক্ষণ হয় অত্যন্ত সংবেদনশীল ও মূল্যবান।

ইষ্ট সাক্ষাৎকারের সময় যত কাছে আসতে থাকে, ভক্ত হৃদয় তত উদ্বেল, ব্যাকুল ও গদগদ হয়ে যায়। মহাপ্রভু শ্রীচেতন্যদেবের ভাযায়, ‘… নয়নং গলদखরঞ্ধারয়া বদনং গদগদ রুদ্ধয়া গিরা। পুলকৈর্নিচিতং বপুঃ…..’ প্রভুর কাছে প্রার্থনা তখন একটই কথা শোনাতে চায় (মহাপ্রভুর ভাষায়)” ‘হে আমার নাথ! পতিতং মাং বিষহে ভাবান্মুবৌ। কৃপয়া তব পদপস্কজ-স্থিত ধূলীসদৃশং বিচিত্তয়।।”

শ্রীহনুমানজীর ভক্তকুল এবং গোস্বামীজীর গুগ্রাহীরা এই তিনবার ‘জৈ, ‘জি, জৈ…’ শব্দের আরো অনেক অর্থ বার করেছেন। যেমন-

  • ভূত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ- এই তিন কালেই আপনার জয় হোক।
  • ভৃঃ ভুবঃ স্বঃ- অর্থাৎ পৃথিবী, অস্তরিক্ষ এবং স্বর্গ, এই তিন লোকেই আপনার জয় হোক।
  • মন, বচন ও কর্ম- অর্থাৎ আপনার ভক্তি ও কৃপায় যেন এই তিন खुদ্ধ इड़।
  • সভ্ধ, রজ ও তম- অর্থাৎ আপনার কৃপা এই তিন গৃণের উপরে निয়ে গিয়ে যেন গুণাতীত অবস্থার অনুভব প্রাপ্ত করায়।
  • ভ্ঞন, কর্ম ও ভক্তি- এই তিনের সমন্ধয়ে যেন আধ্যাত্রিক সাধনা পূর্ণण প্রাপ্ত হয়।

গোস্বামীজী শ্রীহনুমানজীকে এর পরে গোসাঈ বলে সম্বোধন করেছেন। আসুন, দেখা যাক এর দ্বারা তিনি জগৎকে কি জানাতে চাইছেন।

গোস্বামী : সংস্কৃত শব্দ গোস্বামীর অপভ্রংশ হল গোঁসাই। গোস্বামী অর্থাৎ গৌ + স্বামী। এই গৌ শব্দের অনেক অর্থ আছে, যেমন-
গৌ = গরু ! অর্থাৎ যিনি গৌী রক্ষক ও পোষক তিনিই গোস্বামী। শ্রীইনুমানজী সদাই এর রক্ষক।
গ্গে = ইন্দ্রিয়! बরীহনুমানজী জিতেন্দ্রিয় হওয়ার কারণে তাঁকে গোস্বামী বলে সম্বোধন করা হয়েছে।
গেগে = বাণী! শ্রীহনুমানজী ‘বাণী’র সার্থক অধিপতি। প্রভু শ্রীরাম, ভরত, জনকনन্দিনী সীতা, সমস্ত ঋযিগণ ঢাঁর বাণীর শতমুতে প্রশংসা করেছেন। তাই তাঁকে গোস্বামী বলে সন্বোধন করা হয়েছে।
গৌ = পৃথিবী! শ্রীহনুমানজী রাক্ষসদের পাপাচার থেকে পৃথিবীকে সদা রক্ষা করেন। এই পৃথিবীলোকে তাঁর কৃপায় তমোগুণ নাশ হয়। তাই তাঁকে গোস্বামী সম্বোধন সার্থক।
কৃপা করহু গুরুদেব কী নাঈ
গোস্বামীজী চালীসার একদম শেষে এসে শ্রীহনুমানজীর কছছ প্রার্থনা করছেন যে, তিনি যেন গুরুর মতন তাঁর কৃপা বর্ষণ করেন কারণ ‘ইষ্ট যদি গুরু হন’ তাহলে তো কথাই নেই।

আমরা জানি যে, আধ্যাগ্মিক যাত্রায় গুরুর ভূমিকা কি হতে পারে। এই যাত্রায় পদে পদে সংশয়, অধৈর্যতা, দিশাহীনতা ইত্যাদির মত সঙ্কট মাথা চাড়া দেয়। এই সময় মার্গদর্শন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে। বিশেষতঃ আধুনিক সময়ে, সম্পত্তি, শক্তি, অর্থ প্রভৃতির দরকার কেউ অস্বীকার করতে পারে না। সমাজে বাস করার জন্য এ সবই জরুরি। যেটা দরকার তা হলো এই সবের সদ্উপযোগ। এই সব সম্পত্তি ইত্যাদি আবার অনেক বিষয়কে টেনে আনে যেমন কপট বন্ধু, অহংকার, দূরদৃষ্টির অভাব প্রভৃতি।

এই সময় দরকার সত্যি কথা রলার সাহস করা কোনো দূরদৃষ্টিসי্পন্ন সদ্গুরূর যাঁর বিষয়-লোভ জয় হয়েছে এবং সংসারে সবার মঙ্গল কামনাই যাঁর একমাত্র লক্ষ্য। জীবনের যাত্রাপথ সদাই অজ্ঞান অক্ধকারে ঢাক। একটি ভুল সিদ্ধাত্ত যাত্রাপথের দিক পাল্টে দিতে পারে এবং তা বুঝতে বুঝতে জীবনের মূল্যবান অনেক সময় পেরিয়ে যায়। তই যোগ্য ব্যক্তির মার্গদর্শন জীবনে এত গুরুত্তপূুর্ণ।

এইটা জরুরি নয় যে এই মার্গদর্শীকে কোলো গেরুয়াধারী সন্ম্যাসী হতে হবে বা উচ্চকোটীর যোগী-ঋযি হতে হবে। দরকার সেই ব্যক্তির যে, নিজে তার জীবনে তার গুরুর নির্দেশ অহংকারশূন্যভাবে পালন করেছে এবং বিষয়ে থেকেও বিষয়লিপু হয়নি। সমর্থ সদ্গুরু একজনের শুষু মার্গদর্শনই করান না, তিনি জীবাআ্কে পরমাত্মার সাথে মিলনের সেতু হন।

গোস্বামীজীর এই টৌপাঈ আমাদের ভরসা দেয় যে, শ্রীহনুমানজী সাধককে যোগ্য গুরু পাওয়ায় সাহায্য করেন। চৌপাঈ-এর অংশ ‘কৃপা করহু গুরুদেব কী নাঙ্গ’-এর অন্য অর্থও করা যায় অর্থাৎ হে হনুমান! হে গুরু! দেবতাদের মতো কৃপা করুন।

গুরুবন্দনার সেই বিখ্যাত শ্লোক আমরা স্মরণ করতে পারি যেখানে গুরু ব্রহ্মার স্বরূপে শিষ্যের মনে আধ্যাত্মিক জিষ্ভাসার স্রোত জাগান ; গুরু, বিষুণুর রূপে তাঁর শিষ্যের মধ্যে নিষ্ঠার বীজ বপন করেন যা শ্রদ্ধা ও বিশ্যাসের মূল কারণস্বরূপ এবং গুরু, শিব রূপে শিষ্যের মনে বাসা বেঁঁে থাকা মোহ ও ভ্রম দূর করেন। গুরু, এরপর, পরব্রস্মের রূপে সাধককে জন্ম-জন্মান্তরের বন্ধন থেকে মুক্ত করান।

Hanuman Chalisa Chaupai 36 Meaning in Bengali

Hanuman Chalisa Chaupai 36 Meaning in Bengali

Tulsidas, a renowned poet-saint, authored the Hanuman Chalisa with Meaning in the 16th century.

Hanuman Chalisa Chaupai 36 in Bengali with Meaning & Analysis

সঙ্কট কটে মিটে সব পীরা।
জো সুমিরৈ হনুমত বলবীরা।

সারানুবাদ : যিনি মহাবলবীর্য সমন্বিত শ্রীহুমানকে স্মরণ করেন, তাঁর সকল সঙ্কট দূর হয় এবং সর্ব রোগ নিরাময় হয়ে যায়।

ব্যাখ্যা : আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, শ্রীহনুমানজী তাঁর অসংখ্য ভক্তের সঙ্কট দূর করেছেন এবং সবসময়ই করছেন। সমস্ত রামায়ণে যেমন তাঁর সঙ্কট দূর করার অনেক প্রসঙ্গ আছে, তেমনই শ্রীহনুমানজীর স্মরণ ও কৃপায় সঙ্কট থেকে উদ্ধার প্রাপ্তির ঘটনার সাক্ষী হয়তো আপনারা অনেকেই, তার সংখ্যাও কিছু বম নয়। শ্রীহনুমানজীর প্রতি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস অনেক বড় সঙ্কটকেও পাশ কাটিয়ে দেয়। আমার নিজের জানা ও দেখা ঘটনার সংখ্যাও কম নয় যা নিয়ে পরে লেখার ইচ্ছা রইল। আমরা দেখেনি রামায়ণের কিছু পरসঙ্গ :-

(১) সুগ্রীব : বড় ভাই বালীর দ্বারা তিনি বিতাড়িত হয়ে ঋষ্যমুক পর্বতে অবস্থান কালে শ্রীহনুমানজীর কৃপায় প্রভু শ্রীরাম ও লক্ষ্মেের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। বালী সুগ্রীবের স্ত্রীকে অবধি আটক করে রেখেছিলেন। শ্রীহনুমানজী প্রভু শ্রীরামের সঙ্গে ঢাঁর মিত্রতা স্থাপন করান এবং প্রভু তাঁর সব সঙ্কট দূর করেন। প্রভু প্রথমে বালীকে বধ করেন, সুগ্রীবকে কিষ্কিন্ধার সিংহাসরে বসান এবং পত্মী রুমাকেও বালীর কবল থেকে মুক্ত করেন।

(২) বিভীষণ : তাঁর অবস্থান অত্যন্ত তামসিক পরিবেশে হলেও, প্রভু শ্রীরামের প্রতি ভক্তি ও বিশ্বাস তাঁকে সর্বদই নীতিপূর্ণ এবং আধ্যাছ্মিফ ভীবন যাপন করতে সহায়তা করেছে। শ্রীহনুমানজীর সাথে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ ঢাঁকে সুনিশ্চিতভাবে প্রেরণা জুগিয়েছিল যে …. বিনু হরিকৃপা মিলহি নহি সন্তা…। (রা:চ:মা:)— বিভীষণ শ্রীহনুমানজীকে বলছেন যে, আমার এখন দৃঢ় বিশ্বাস ২য়েছে যে, প্রভু শ্রীরাহের কৃপা বিনা আপনার মতো সন্তের সাক্ষাৎ হতে না। শ্রীহনুমানজীর পরামর্থি তিনি রাবণকে বোঝাতে যান যে তিনি যেন

Hanuman Chalisa Chaupai 35 Meaning in Bengali

Hanuman Chalisa Chaupai 35 Meaning in Bengali

Hanuman Jayanti is a significant occasion for the mass recitation of the Hanuman Chalisa Meaning.

Hanuman Chalisa Chaupai 35 in Bengali with Meaning & Analysis

ঔর দেবতা চিত্ত ন ধরঈ।
হনুমত সেই সর্ব সুখ করঈ।

সারানুবাদ : অন্য দেবতা চিত্তে ধারণ না করে শ্রীহনমানজীর সেবা সকল সুখ প্রদান করবে।

ব্যাখ্যা : এই চৌপাঈটি থেকে প্রথম যে প্রশ্নটি আমাদের মনে জেগে ওঠঠ তা হলো শ্রীহনুমানজীর উপাসনা করলে কি অন্য দেব-দেবীর উপাসনা করা কঠিন হয়ে পড়বে বা অন্য দেবতারা কি মনে ঠঁঁই পাবেন না ?

বস্তুতপক্ষে শ্রীহনুমানজীর উপাসনা সাধকদের তাঁদের নিজের নিজের ইষ্টদেবের উপাসনাকে আরো গতি দেয় কারণ তাঁর ভক্তিতে প্রাপু জ্ঞান এবং গুণ সেই দেবতাদের উপাসনার ভিতকে আরো মজবুত করে। ঔর দেবতা চিত্ত ন ধরঈ উপাসনা দু-রকমের হয়-সকাম ও নিষ্কাম।

অধিকাংশ সাধন সকাম দিয়েই শুরু হয়। ভক্ত ধ্রুবর চরিত্রই তার প্রমাণ। সমস্যাটা হলো কখনো কখনো ভক্ত পরিণামের আশায় আকুল হয়ে ওঠে এবং সেই কারণে বিভিন্ন রাস্তায় (সাধনপথ, পন্থা ইত্যাদি) ঘোরাফেরা করে। ভক্তদের এই অধীরতাই তাঁদের প্রকৃত ভক্তির পথে বাধা হয় এবং প্রভুকৃপা থেকে তারা বঞ্ণিত হয়।

গোস্বামীজী এই চৌপাঈতে বলছেন যে, এই সব সবনম ভক্তের চিত্তবৃত্তি চঞ্চল হওয়ার কারণে নিজ নিজ ইষ্টধারণ বা ধ্যান বাধাপ্রাপু হয়। এই অবস্থায় হনুমানজীর স্মরণ নিলে, তিনি সেই সাধকের মরের চঞ্চলতাকে কম্মাতে সাহায্য করেন।

কারণ বায়ুপুত্র শ্রীহনুমান প্রাণের স্থিরতা এনে চিত্ত-নিরোধে সাহায্য করেন এবং সেই সাধক তখন বুঝতে পারে যে তার সেই সকাম সাধনা সফল না হওয়ার অর্থ হলো যে সেই কামনা পূরণের এখনও সময় আসেনি বা সেই কামনা পূরণ তার পক্ষু কল্যাণকারী নয়।

ইষ্টদেবের আরাধনা তাই নিষ্কামভাবে করতে ভক্তির আনন্দ এক আলাদা মাত্রা পায়। নিক্কামভাবে শুরু না করে কামনা দিয়ে শুরু করলেও, লক্ষ্য রাখতে হবে কামনার বেগ যেন মাথা চাড়া দিয়ে না ওঠে। একটা জিনিস মনে রাখলে ভাল হয় যে, নিষ্কাম সাধকের পার্থিব প্রয়োজনগুলি কিন্তু শীরনহুমানজীর নজর ভড়ায় না। তিনি লেঙুলি পূর্ণ তে করেনই এবং তার সাথে সাথথ তাকে তার ইটষ্টে বাডে পৌঁহতে মার্গদর্শনও করান।

Hanuman Chalisa Chaupai 34 Meaning in Bengali

Hanuman Chalisa Chaupai 34 Meaning in Bengali

The recitation of Shree Hanuman Chalisa is believed to ward off evil and negativity.

Hanuman Chalisa Chaupai 34 in Bengali with Meaning & Analysis

অন্তকাল রঘুবর পুর জাঈ।
জহাঁ জন্ম হরি-ভক্ত কহাঈ।

সারানুবাদ : যেখানেই ( যে দেশে, বা বর্ণে, বা জাতিতে) সেই ভজনকারীর জন্ম হোক না কেন, ভগবদ্ভক্ত বা প্রভুর ভক্তরূপেই তার পরিচিতি হয় এবং অত্তে তিনি শ্রীরামের নিতাধামে গমন করেন।

ব্যাখ্যা : এই চৌপাঈটি এর আগের চোপাঈটির সঙ্গে একসাথে দেখতে হবে। শ্রীতুলসীদাসজী এই চৌপাঈতে শ্রীহনুমৎ ভজনের পরিণামের কথা বলতে গিয়ে বলছেন যে, তাঁর স্মরণ-মনন-কীর্তন প্রভু শ্রীরামের কৃপাকে যেমন সহজে পাইয়ে দেয়, তেমনই কোনো কারণে যদি সাধনা অপূর্ণ থাকে, তাহলেও তার পরিচিতি জন্মান্তরে হরিভক্তরূপেই হয় এবং শেষ পর্যন্ত প্রভু শ্রীরামের ধামেই তার স্থান হয়।

গোস্বামীজী এই চৌপাঈতে ‘অন্তকাল’ ও ‘জন্মান্তর’ এই দুটি বিষয়ে আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাইছেন। প্রথনে এই ‘অন্তকাল’-এর অর্থ আমরা দেখি। এর এক অর্থ যেমন হয় অন্তে বা শেযে, তেমনই এর আর এক অর্থ শেষ সময় বা মৃত্যুর সময়। সনাতন ধর্ম জন্মান্তরবাদে বিশ্বাসী আর তাই দেহত্যাগের পূর্ব মুহূর্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।

জন্ম ও মৃত্যুর মধ্যেকার প্রত্যেক স্কনেের হিসাব আমরা রাখতে পারি কিন্তু মৃত্যুর পর তার কি গতি হয় তা জানা সন্তব হয় না। ‘জন্মান্তর’ একথা বলে এে মৃত্যুর পর সূক্মদেহ এক দেহ ছেড়ে অন্য দেহে প্রবেশ করে ‘কর্মের এক সুব্যবস্থিত অবস্থা অনুযায়ী।। কিন্তু এই মাঝখানের সময়ে কি ঘটে তা জানার ফ্মুতা মন ও বুদ্ধির পক্ষে সম্ভব হয় না। কর্র্মের এই সুব্যবস্থিত অবস্থা

প্রধানতঃ সঞ্ণিত, প্রারক্ক ও ক্রিয়মাণ কর্মের দ্বারা চালিত হয়। এই ব্যবস্থারই এক অঙ্গ হলো মৃত্যুর ঠিক পূর্বমুহূর্তের মন ও বুদ্ধির অবস্থা। মৃত্যুর পর আআার গতি কি হয় অর্জুনের এই প্রশ্নের ঊত্তরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমদ্ভাগবদ্গীতায় বলছেন, “যে আমার স্মরণ করতে করতে শরীর ত্যাগ করে, সে আমারই স্বরূপকে প্রাপু হয়-এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ बनই।”

জীবনের অন্তিম সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয় এইজন্য যে, সেই মুহূর্তের মনের ভাবনা পরবর্তী জীবনের চালনা শক্তিকে প্রভাবিত করে। মৃত্যুপথযাত্রী মানুফেরা এবং মনোবিজ্ঞানীরা বলেন সেইসময় জীবাত্মা সমস্ত জীবনের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলিকে ফিল্মের মতো ‘ফাস্ট ফরোয়ার্ড’ করে দেখিয়ে দেয় এবং মৃত্যুর মুহূর্তে সেইসব প্রচগুভাবে মনে আলোড়ন ফেলে।

তাই দেখা যাচ্ছে যে, মৃত্যুর সময় বা অন্তিমকালের গুণবত্তা পরবর্তী জীবনের দিশা নির্দেশ করে। শ্রীহনুমৎভজন ও নামকীর্তন জীবনকে সুন্দর থেকে সুন্দরতর বানায় এবং তাই শ্রীতুলসীদাসজীর কথায় ‘অন্তকাল রঘুবর পুর জাঈ’ হয়ে যায় কারণ ভজনের অভ্যাস মন ও বুদ্ধিকে সদা ‘নামময়’ করে।

গোস্বামী তুলসীদাসজী সেই সমস্ত অসংখ্য সাধক, ভক্তদের কথাও মাথায় রেখেছেন যাঁরা শুদ্ধজীবন ও সৎসঙ্গে সময় কাটালেও ডাঁদের ইপ্সিত লক্ষেন তা সে পরমাজার সাক্ষাৎকার, ব্রহ্মলীন অবস্থা, মুক্তি বা ইষ্টসাযুজ্য ইত্যাদিতে পৌঁছতে পারেননি।

গোস্বামীজী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শ্রীমদ্ভাগবদ্গীতার সেই বিখ্যাত উক্তির কথা মাথায় রেখেছেন যেখানে ভগবান বলছেন, “যোগভ্রষ্ট মানুষ পূর্ণকর্ম করার কারণে নির্দিষ্ট লোক প্রাপু হয়ে সেখানে অনেক বছর কাটিয়ে কোনো পবিত্র শ্রীমন্তর ঘরে অথবা বুদ্ধিমান যোগীর কুলে জন্ম নেয়। সংসারে এই ধরনের জন্ম নিঃসন্দেহে অত্যন্ত দুর্লভ হয়।”

গোস্বামীজী তই বললেন, “জহাঁ জন্ম ইরি-ভক্ত কহাঈ।” ब্রীহনমমান স্মরণ-মনন-কীর্তনে যার অনুরাগ থাকে, কোনো কারণে এই জীবনে ইপ্সিত লক্ষে না পৌঁছলেও, সে যেখানেই জন্ম নিক, অবশ্যই প্রভুভ্তুরূপে তার পরিচিতি হবে।

প্রভু শ্রীরাতের বৈরী না হন এবং তাঁর পত্নী সীতাকে শেন সসম্মানে প্রভু শ্রীরাদের কাছে ফিরিয়ে দেন। ঢাঁদের এই সাক্ষাৎ এতদূর সুদূরপ্রসারী হয়েছিল যে ভ্রাতা রাবণকে: বোঝাতে গিয়ে বিভীষণ তার দ্বারা পদাঘাত প্রাপু হন এবং পরে সমুদ্র লধ্টন করে প্রভু শ্রীরামের শরণাগত হন। করুণানিধি শ্রীরাম তাঁকে লঙ্কার অধিপতি করেন এবং সখা ও পরামর্শদাতা হিসাবে সম্মান দেন।

(৩) সীতা : লঙ্কার অশোকবনে জনকনন্দিনী সীতার চরম সঙ্কটের সময় শ্রীহনুমানজীর সেখানে উপস্থিত হওয়া এবং তাঁকে প্রভু শ্রীরামের আংটী দিয়ে তাঁর বিরহের অবসান ঘটানোর প্রচেষ্টা রামায়ণের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। তিনি নিজের বিশালমূর্তি দেখিয়ে মাতা সীতার মনে বিশ্বাস জাগান যে রাবণের রাক্ষসবাহিনীর তুলনায় বানর ও ঋক্ষরা কোনো অংশে কম নয়। মাতা সীতা শ্রীহনুমানজীকে আশীর্বাদ দিয়ে অনেক কথার মধ্যে এই কথাও বলেন যে, ঢাঁর বিরহ-সাগরে তিনি (শ্রীহনুমানজী) এক জাহাজ স্বরূপ।

(8) লস্ম্মণ : লক্ষ্মণ সর্বদাই শ্রীইনুমানজীর কাছে ঋণী। শ্রীহনুমানজী তাঁকে তিন তিন বার মৃত্যুমুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছেন। প্রথমবার সঞ্জীবনী বুটি এনে, দ্বিতীয়বার খগরাজ গরুড়কে নিয়ে এসে এবং তৃতীয়বার পাতালে অহিরাবণ বধে যোগদান করে। লঙ্কাযুদ্ধের অন্যতম রাক্ষসবীর রাবণপুত্র মেঘনাদকে বধ করার এক অন্যতম কাণ্ডারীও ছিলেন শ্রীহনুমানজী, যাঁর সাহায্যে লক্ষ্ণী এই নিধন কার্য করেন।

(৫) ভরত : অধিকাংশ রামায়ণই প্রভু শ্রীরামের ভাই ভরতের যশগান মুক্তকছে করেছেন। ঢাঁর তপোশ্চর্যা ও সদ্গুণ কোনো সিদ্ধ মহাপুরুষের চেয়ে কম ছিল না। ভরত প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে প্রভু শ্রীরামের চৌদ্দ বৎসর বনবাস যেদিন শেষ হবে, তার পরদিন তিনি (প্রভু শ্রীরাম) অযোধ্যায় না ফিরলে, তিনি আগুনে আগাহতি দেবেন। তাঁর এই পরম প্রেমাকুল ভাইকে প্রভু শ্রীরাম বনবাসকালে সর্বদা স্মরণ করতেন এবং তাঁর জন্য সবার আড়ালে অশ্রু বিসর্জন করতেন, যা একবার লক্ষ্মেণের নজরে পড়ে যায়।

প্রভু যে শীঘই অযোধ্যায় ফিরবেন, প্রভু শ্রীরামের আদেশে শ্রীহনুমানজী ভরতকে এই সমাচার দিতে এসে দেখেন যে প্রভুর অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তনের প্রতীক্ষায় ভরত পরম আকুল ক্রল্দন করছেন। নিজের বিপ্ররূপ ছেড়ে শ্রীহনুমান ভরতকে এই সমাচার দিলে ভরতের দুঃখ দুর হয়। শ্রীশ্রীরামচরিতমানসে গোস্বামীজী এই ঘটনার উল্লেখ করে লিখেছেন যে, ভরত বলছেন, “হে হনুমান, তোমার দর্শনে আমার সব দুঃখ চলে গেছে। মনে হচ্ছে তোমার রূপে আজ আমার প্রিয় রামের সাতে মিলন হচ্ছে।”

(৬) বানর : যখন দক্ষিণ দিশায় জাম্ববানের নেতৃত্বে বিশাল বানরবাহিনী মাতা সীতার খোঁজে রওনা হলেন, তখন সুগ্রীব তাদের একমাস সময় দিয়েছিলেন এবং মাতা সীতার খেঁঁ না আনতে পারলে মৃত্যুদত্ডের বিধান দিয়েছিলেন। একমাস সময় প্রায় পূর্ণ হওয়ার মুখে ছিল এবং সমস্ত বানরকুল যখন নিরাশায় বিষাদগ্রস্ত ছিল, তখন -্রীহনুমানজী সমুদ্র লখ্যন করে মাতা সীতার থোঁজ এনে সাক্ষাৎ মৃত্যুদণ্ড থেকে অঙ্গদ, জাম্ববান ও অন্যান্য বানরবীরদের রক্ষা করেছিলেন।

(৭) প্রভু শ্রীরাম : যিনি স্বয়ং সঙ্কটহারী, তাঁর সঙ্কট দূর করেছিলেন শ্রীহনুমানজী। পরপর দু-দুবার প্রভু শ্রীরামের প্রাণরক্ষা করেন- একবার মহামতী গরুড়কে এনে আর দ্বিতীয়বার পাতালে অহিরাবণের ভুজা-উৎপাটন করে। এছাড়া প্রভু স্বয়ং মাতা সীতার খোঁজ না পাওয়ায় বিরহাকুল ছিলেন, তখন তাঁর দুঃখ দূর করেছিলেন মাতা সীতার চূড়ামণি এনে দিয়ে। এছাড়াও, রামায়ণে শ্রীহনুমানজীর সঙ্কটহরণের আরো অনেক বাহিনী আছে। যেমন-

(৮) রাজা সুবাহু : একবার অপ্ধমেধ যজ্ঞের ঘোড়ার সাথে থাকবার সময় তাঁর কৃপায় রাজা সুবাহর সঙ্কট দূর হয়েছিল।

(৯) পুষ্কন, শক্রম্ন ও অন্যান্যরা : আর একবার ধর্মপ্রাণ মহারাজ বীরমণির রাজ্যে অশ্বমেধের ঘোড়ার প্রবেশ ও তাকে আটকানোর পরিপ্রেক্ষিতে এক ভীষণ যুদ্ধ বাধে যাতে যুদ্ধক্ষেত্রেই ভরতপুত্র পুষ্কল ও পরে স্বয়ং শত্রুঘ্যের মৃত্যু হয়। শ্রীহনুমানজীর বীরত্ব, বুদ্ধি ও প্রভুকৃপায় শত্রুঘ, পুষ্কলসহ সমস্ত মৃত যোদ্ধারা প্রাণ ফিরে পান।

এইসব মহান চরিত্রদের যদি শ্রীহনুমানজী সঙ্কট থেকে উদ্ধার করতে পারেন, তাহলে তাঁর স্মরণ-মনন ও কীর্তনে আমাদের সব সঙ্কট অবশ্যই দূর হবে এ বিষয়ে কোনো সন্দেইই থাকতে পারে না। শুধু দরকার হলো তাঁর প্রতি অবিচল শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস।

Hanuman Chalisa Chaupai 33 Meaning in Bengali

Hanuman Chalisa Chaupai 33 Meaning in Bengali

People often chant the Hanuman Chalisa Lyrics in English to seek strength, courage, and protection.

Hanuman Chalisa Chaupai 33 in Bengali with Meaning & Analysis

তুমহরে ভজন রাম কো পাবৈ।
জনম জনম কে দুখ বিসরাবৈ।।

সারানুবাদ : আপনার ভজন করলে তা প্রকৃত্ক্ষে শ্রীরামের উদ্দেশোই নিবেদিত হয় এবং শ্রীরামের প্রীতি সম্পাদন করে। (শ্রীরামকে পাইয়ে দেয়)। জন্ম-জন্ম ধরে সঞ্চিত দুঃখরাশিকে তা ভুলিয়ে দেয় (অর্থাৎ দুঃখ নির্মূল হয়ে যায়)।

ব্যাখ্যা : গোস্বামীজী এই টৌপাঈতে আবার দৃঢ়তার সঙ্গে শ্রীহনুমানজীর ভক্তদের আশ্বস্ত করেছেন যে, তাদের শ্রীহনুমান ভজন প্রকৃতপক্ষে শ্রীরামের প্রসন্নতার অধিকারী বানাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই দুইয়ের সংযোগে জন্ম-জন্মাস্তরের দুঃখও নাশপ্রাপু হচ্ছে।

শ্রীহনুমানজী সনাতন, চিরঞ্জীবী এবং পরাৎপর। বিভিন্ন শাস্ত্রে এরকম উল্লেখ আছে যে শ্রীহুমানজী হেমকূট পর্বতের দক্ষিনে ‘কিমপুরুষবর্য’-এ অবস্থান করেন এবং সেখানে প্রভু শ্রীরাম ও মাতা সীতার বিগ্রহের নিত্যসেবা করেন এবং গন্ধর্ধলোকের নিবাসীদের সাথে রামকথা শ্রবণ ও কীর্তনের আনন্দ প্রতিনিয়ত নেন। শ্রীহনুমানজীর দর্শন ও অপূর্ব রামকথা শোনার লোভে শ্রীনারদ ওখানে প্রায়ই যান।

‘গর্গসংহিতা’য় এ বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ আছে। বলা হয়েছে যে, শ্রীহনুমানজীর ভজন প্রভু শ্রীরামের কৃপালাভের পথকে শধু সুগমই করে না, তা জন্ম-জন্মান্তরের দুঃখরাশিকেও নির্মূল করে। প্রশ্ন উঠতে পারে জন্ম-জন্মাস্তরের দুঃখরাশিকে ভজন কিভাবে নির্মূল করবে কারণ সঞ্চিত কর্মের রাশিই তো প্রারধ্ধ হয়ে সুখ-দুঃখ ভোগ করায় ?

প্রকৃতপক্ষক ‘কর্মাধীন জগৎ’ এই তত্তৃকে বা এই সিদ্ধান্তকে কখনই খণ্ডন করে না। আধ্যাত্ছিক দৃষ্টিতে, সমস্ত দুঃখের মূলই হলো অহংকার। ख্রীহনুমান ভক্তি বা ইষ্ট-ভক্তির চরমাবস্থায় অহংকার বিগলিত হয়ে গেলে, তার সাথে সাথে সমস্ত দুঃখও নিরাধার হয়ে যায়।

শ্রীমন্ মহাপ্রভু বলেছিলেন, “আমি, আমার, এইরকম আত্মাভিমানই সংসারভয় বা মায়াবদ্ধতা।” জীব প্রাক্তন কর্মফলের অধীন, তাই তার ভোগের স্বাধীনতা নেই। চিত্তশুদ্ধিতে জ্ঞানের পূর্ণ বিকাশ হলে মায়ার আবরণ মুক্ত হয় অর্থাৎ আমি, আমার এই আআ্মাভিনান বা মায়াবদ্ধতার নিবৃত্তি হয়।

অনস্তনল স্থায়ী অত্যন্ত বিরল অবস্থায় হয়। बরীহনুমানজীর ক্রেত্র তা চিরস্থায়ী। তাই শ্রীহনুমনজীর ভজন, কীর্ডন সহজেই ভক্তকে রাম-অনুরাগী বরে ভবং প্রভুর অইহতুফী কৃপা সহজেই নেমে আসে।

Hanuman Chalisa Chaupai 32 Meaning in Bengali

Hanuman Chalisa Chaupai 32 Meaning in Bengali

Shri Hanuman Chalisa is composed of 40 verses that extol the virtues of Lord Hanuman.

Hanuman Chalisa Chaupai 32 in Bengali with Meaning & Analysis

রাম রসায়ন তুমহরে পাসা।
সদা রহো রঘুপতি কে দাসা।

সারানুবাদঃ আপনার কাছে রাম রসায়ন বিদ্যমান। আপনি সর্বদা রঘুপতির দাস হয়ে আছেন।

ব্যাখ্যা : রাম রসায়ন তুমহরে পাসা
এই চৌপাঈতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে ‘রাম রসায়ন’-এর অধিকারী শ্রীহনুমানজী। এখন এই ‘রাম রসায়ন’ বলতে কি বোঝানো হচ্ছে? শাস্ত্রকার ও প্রখ্যাত রামভক্তরা এর অনেক রকম অর্থ করেছেন।

যেমন এর অর্থ হলো- অধ্যাত্ম-বুদ্ধি। অর্থাৎ নিজের স্ব-স্বরূপের বিষয়ে অবগত হয়ে, সেই উপলব্ধির উপর দাঁড়িয়ে পরমতত্ত্তের সঙ্গে তার একাত্মের চেষ্টারূপ বুদ্ধিকে বলে ‘রাম রসায়ন’। শ্রীশ্রীরামচরিতমানসে উল্লেখ আছে

যে, প্রভু শীরীহের এই প্রশ্ন যে, কে আপনি ? এর উত্তরে শ্রীহনুমানজী বললেন যে “দেহের দৃষ্টিতে আমি আপনার দাস, জীবের দৃষ্টিতে আপনার অংশ ও পরমার্থিক দৃষ্টিতে যা আপনি তা আমিও-এই আমার নিশ্চিত ধারণা।” ভক্তিমার্গের দিক দিয়ে বিচার করলে ‘রাম রসায়ন’ হলো প্রেম-ভক্তি যা ‘পূর্ণ শরণাগতি’ ছাড়া কখনই সষ্তব নয়।

তুলসীদাসজী রামনামে লীন অবস্থায় তাঁর উপলক্ধির কथा বলতে গিয়ে গেয়ে উঠলেন, “হাম্ তো রমতে রাম ভরোসে, রজা করে সো হোঈ’-অর্থাৎ আমার কাজ হলো রাম ভরোসে (প্রভুর ভরসায়) নাম করা, বাকি তিনি যা করার করবেন। প্রেমভক্তির পরাকাষ্ঠা সাধিকা মীরাবাঈ গেয়ে উঠলেন এই বলে যে, গিরিধর গোপাল ছাড়া আমার দ্বিতীয় কেউ নেই। আমি তাঁর কীর্তন করি, বাকি “শো হোয়ে সো হোঈ” (যা হবার তা (ক)।

‘রসায়ন’-এর ইংরাজী হল ‘chemistry’ ‘রাম রসায়ন’ মানে রামের কেমিস্ট্রি। ‘রাম’ হলো তারকব্রহ্ম নাম। শাস্ত্রকাররা বলেন ‘রাম’ নামের তপস্যায় মধ্যে কি এমন গূঢ়-রহস্য আছে, তা জানার আগ্রহ অনন্তকাল ধরে বিরাজ করহে।

শ্রীশ্রীরামচরিতমানসের ‘সুন্দরকাণ্ড’-এ উল্লেখ আছে যে, বিভীষণ তো প্রভু রামের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তাঁর মুখ থেকে শুনেই ফেললেন তাঁর স্বভাবের কথা। প্রভু শ্রীরাম বললেন, “শুনহ সখা নিজে কহউ সুভাউ। জান ভুসুণ্ডি সম্ভু গিরিজাউ।।” শ্রীরাম আরও বললেন, “বিশ্ব চরাচরের কল্যাণদ্রোহীও যদি মদ্, পোহ, ছল, চাতুরী পরিহার করে ভয় পেয়ে আমার শরণাগত হয়, তাকেও আমি অনতিবিলম্বে সাধুর স্তরে উন্নীত করে দিই।। আমার প্রীতির লক্ষণ সকল বলছি।

জনক, জননী, ভ্রাতা, পুত্র, ভার্যা, দেহ, সম্পদ, গৃহ, বন্ধু-পরিবার সকলের মমতার বন্ধনসূত্র সকলকে রজ্জুরূপে ব্যবহার করেও যে তার মনকে আমার সঙ্গে নিত্যयুক্ত করে দেয় (অর্থাৎ আমাকেই সমস্ত সাংসারিক বন্ধনের মূলরূপে স্বীকৃতি দেয়), যে সমদর্শী, যার নিজস্ব ইচ্ছা বলে কিছু নেইই আর যে হর্ষ-বিযাদে, চায় কাতর হয় না, তেমন ব্যক্তিই আমার হৃদয়ে স্থান পায়।”

আর এক মত হল সংসারের সমনু বিষয়ক্ত প্রভাব সমাপু হরতে পারে পর দেবী সীতা শীইনুমানজীকে দিব্য রতূময় হার উপহার দিলেন। এই হার পরার পর শ্রীহনুমানজীর স্বর্ণময় চেহারা আরো উজ্ট্রল ৫ শোভনীয় হলো, জিত্জে করলেন, “প্রিয় হনুমান! আপনার কি আমার চেয়ে আমার নাম নিক্চিত মত। আপনি স্বয়ং তো কেবল অযোধ্যাবাসীদের উদ্ধার করেছেন। কিস্তু আপনার নাম ত্রিভুবনের সমস্ত জীবের উদ্ধারকারী।”

‘রাম রসায়ন তুমহরে পাসা’-এর আর এক অর্থ এরকমও হতে পারে যে ‘রসায়ন রাম তুমহরে পাসা’। রসায়ন অর্থাৎ রস + অয়ন = রসায়ন ; রসের মার্গ ब্রীরাম আপনার কাছে থাকেন। আপনি সর্বদা তাঁর দাস হয়ে সেই রসায়নে ডুঁবে আছেন আর প্রভু আপনাতে মগ্ন হয়ে আছেন।

সদা রহো রঘুপতি কে দাসা
ভভগবান শ্রীকৃষ্ণ চাঁর নরলীলা সাঙ্গ করার ঠিক আগে উদ্ধবকে তাঁর বিভূতির বিষয়ে বলতে গিয়ে বলনেেন, ‘কিম্ পুরুষানাং হনুমান্।’ (ख্রীমম্ভাগবত)। অর্থাৎ সেবকের মব্যে হনুমান (আমার বিভূতি স্বরূপ)।

বাল্মীকি রামায়ণের উত্তরকাতে এক প্রসঙ্গ আছে যেখানে প্রভু শীরাম बরীহনুমানজীকে তাঁর কাছ থেকে কিছু প্রার্থনা করতে বললেন। ख্রীহনুমানজী তার উত্তরে বললেন, “প্রভু, আমার কোনো ইচ্ছাই নেই।” প্রভু শ্রীরাম যথন বললেন যে, আপনাকে আপনার পছন্দমতো কিছু দিতে পেরেছি এই সুখ যাতে আমার হয়, তার জন্য তে কিছু অস্তত: প্রার্থনা করুন, তখন এীননমানজী या প্রার্থনা করলেন, তা একমাত্র তিলিই করতে পারেন।

শ্রীহনুমানজী বললেন, “হহ রাজন, ঐীরাম, আমার পরম স্নেহ সদা আপনাতেই বিদ্যমান। হে বীর, আমার অবিচল ভক্তি আপনাতেই সর্মি্পিত। আপনাকে ছেড়ে অন্য কেলো এীহনুমানজীর মনের অস্তরতম ইচ্ছইই হলো প্রভু শ্রীরামের অন্তরঙ্গ সেবক হয়ে তাঁকে প্রসন করা। প্রভুর দাস হয়ে থাকার মট্যেই এ্রীহনুমানজী গৌরব বোষ করেন।

Hanuman Chalisa Chaupai 31 Meaning in Bengali

Hanuman Chalisa Chaupai 31 Meaning in Bengali

Devotees around the world recite the Hanuman Chalisa in English with deep reverence.

Hanuman Chalisa Chaupai 31 in Bengali with Meaning & Analysis

অষ্ট সিদ্ধি নৌ নিধি কে দাতা।
অস বর দীन জাनকী মাতা।

সারানুবাদ : মাতা জানকীদেবী আপনাকে এইরূপ বর দিয়েছেন যে আপনি ইচ্ছা করলেই অষ্টসিদ্ধি (আট থ্রকার সিদ্ধি) এবং নয় প্রকার সম্পদ দান করতে পারেন।

ব্যাখ্যা : একজন যোগসিদ্ধ পুরুষ যিনি কুণুলিনী যোগসাধনার শীর্ষে পোঁছেছেন, তিনি স্বভাবতই অষ্টসিদ্ধির মালিক হন। এই আট প্রকার সিদ্ধি সাধনার বিভিন্ন স্তরে যোগীর প্রথতে অনুভবে এবং পরে কার্যকারিতার রূপ নেয়। এই আট প্রকার সিদ্ধি যোগীপুরएষ শ্রীহনুমানজী তাঁর যৌবন অবস্থাতেই কঠোর যোগসাধনায় পেয়েছিলেন।

ভগবান শঙ্করের কৃপাতেই এই সিদ্ধিগুলি পাওয়া যায় আর শ্রীহনুমানজী হলেন স্বয়ং রুদ্র অবতার। শ্রীহনুমানজী, প্রভু ত্রীরামের নরলীলায় তাঁর যোগ্য সহায়ক হয়ে, তাঁর সেবাধর্ম পালনের পথে এই সিদ্ধিগুলির প্রয়োগও করেছিলেন। শ্রীহনুমানজীর কাজে লাগা এই যৌগিক শক্তিগুলি এই রকম :

Hanuman Chalisa Chaupai 31 Meaning in Bengali 1
Hanuman Chalisa Chaupai 31 Meaning in Bengali 2Hanuman Chalisa Chaupai 31 Meaning in Bengali 3

নয় निधि
নয়া প্রকারের দৈবী সম্পদ আছছ। শাস্ককরগণ এই নয় निধির আনেক রকম অর্থ করেছেন যার মব্যে (ক) ভূমি বা সাগরের গভীর ৫েকে বা গাছপালা থেকে পাওয়া নয় সম্পদ ; (খ) নবধা ভক্তি।

ভূমি, সাগর বা বনস্পতি থেকে পাওয়া নয় নিধি এইরকসম : (১) পদ্ম, (২) মহাপদ্ম, (৩) শঙ্য, (৪) মকর, (৫) কচ্ছপ, (৬) মুকুন্দ (মূল্যবান রত্ন), (৭) কুন্দ (মূল্যবান ধাতু), (৮) নীল (নীলরড্ন), (৯) থর্ব।

নবধা ভক্তি : ভক্তি যাজনের নয়টি অঙ্গ: (১) শ্রবণম্ (২) কীর্তনম্ (৩)
বিষ্ণু শ্ররণম্ (৪) পাদসেবনম্ (৫) অর্চনম্ (৬) বন্দনম্ (৭) সখ্যম্ (৮) দাস্যম্ (৯) আত্ম-নিবেদনম্।

সামাজিক দৃষ্টিতে নিচের বিষয়গুলিকেও নয় নিধি রূপে মানা হয়-
(১) ধন (২) সম্পতি (৩) রাজ্যসুখ (৪) মান (৫) প্রতিষ্ঠা (৬) সমৃদ্ধি (৭) রত্ম (৮) সুন্দরী এবং প্রিয়তমা পত্নী (৯) প্রমপূর্ণ পরিবার।

এখানে একটা প্রশ্ন উঠতে পারে এই সিদ্ধি বা নিধি যদি কেবলমাত্র যোগের
(তা সে রাজযোগ বা ক্রিয়াযোগ বা অষ্টাঙ্যোগের পূর্ণতর রূপ হোক) সর্বোক্তম অবস্থার সাধ্য হয়, তাহলে শ্রীহনুমানজী শুধু কি ঝষি, যোগীদেরই এই শক্তি দান করতে পারেন, অন্য কাউকেই নয়? মাতা জানকী শ্রীহনুমানজীকে বর দিয়েছিলেন যে, এই শক্তি তিনি যাকে উপযুক্ত মনে করবেন তাকেই দান করতে পারবেন।

বিভিন্ন সাধনপথের প্রায় সবাই শ্রীহনুমানজীর কৃপাপ্রত্যাশী। শ্রীহনুমানজী তাঁর ভক্তদের সাধনপথের উত্তরণের অবস্থা অনুযায়ী এবং সাধকের মানসিক আকাক্ষা অনুসারে এই শক্তির উপযোগ করেন। যেমন, যোগবিদ্যার গ্রন্থসমূহের মতে আধ্যাছ্মিক ক্ষেত্রে সিদ্ধ মহাপুরুষদের মধ্যে এমন কিছু লক্ষণ যুক্ত হয় যা অন্য সাধনায় থুব একটা লক্ষ্য করা যায় না, যার গণনা অষ্টসিদ্ধির মধ্যে পড়ে।

আবার অন্য সাধন পথে এমন কিছু নিধির লক্ষণ আমরা সাধক/সাধকের পরিবারের মধ্যে দেখি যার সংস্ষিপু পরিচয় আমাদের করিয়েছেন বিদ্বান কবি ভর্তৃহরি চাঁর রচনা ‘নীতিশতক’-এ। রাজা ভ্তৃহরি পরবর্তী জীবনে বৈরাগ্যের পথ অবলম্বন করেছিলেন।

তিনি লিখছেন (নিধিগুলি এইরকম) :-

  • চরিত্রবান সন্তান,
  • প্রিয়ত্মা পত্লী,
  • স্নেহপণর হিত্র,
  • শ্রসন্নমুখ স্থির বৈভব,
  • বিদ্যার তেজোদীপু চেহারা।

এই নয় ক্রকার নিধি শ্রীহরি সক্তষ্ট হয়ে চাঁর ভক্তর সাংসারিক কষ্ট দূর করার জন্য দান করেন। এইবার আসুন আমরা এই চৌপাঈটিকে একটু অন্যাভাবে বুঝি।

অষ্টসিদ্ধি আর নয় নিধির দাতা কে হতে পারেন? কে আবার-প্রভু শ্রীরাম। শ্রীরাম শ্রীহনুমানজীকে বর দিলেন যে, “হে প্রিয় হনুমান, তোমার সেবা, অনুগ্রহ, সঙ্কটহরণের সর্বদা প্রয়াসের ঋণ আমি কোনোদিন শোধ করতে পারবো না। আমার এই প্রসন্ন মন তোমাকে তাই বর দিচ্ছে যে দেবী জানকী তোমার মাতা হউন।”–‘অসবর দীন জানকী মাতা’।

ব্যস, আবার কি! সীতাজী মাতা হলে, স্বাভাবিকভাবেই প্রভু শ্রীরাম পিতা হলেন। আর তার সাথে সাথেই প্রভুর বস্ত্র, সিদ্ধি, নিধি, ইত্যাদি সব শ্রীহনুমানজীর হয়ে গেলো। ত্রীহনুমানজী তাঁর সিদ্ধির উপযোগ সর্বদা রামভক্তদের প্রেরণা, মার্গদর্শন, শক্তি, ধৈর্য এবং শ্রেয়র জন্যই করেন। যে বিরাট রামকাজের দায়িত্ব নিয়ে তিনি এসেছেন, এতো তারই অঙ্গ।