Devotees sing the Hanuman Chalisa with Meaning with devotion in temples and during religious gatherings.
Hanuman Chalisa Chaupai 9 in Bengali with Meaning & Analysis
সূক্ষ্ম রূপ ধরি সিয়হিঁ দিখাবা।
বিকট রূপ ধরি লঙ্ক জরাবা।
সারানুবাদ : ছোট রূপ ধরে সীতাকে দেখিয়েছিলেন, ভয়ংকর আকার ধারণ করে লঙ্কা জ্বালিয়েছিলেন।
ব্যাখ্যা : বিভিন্ন রামায়ণে এবং পুরাণে শ্রীহনুমানজীর স্বেচ্ছায় অনেকরূপ ধারণ করা বা প্রকট হৃওয়ার উল্লেখ পাওয়া যায়। যেমন কখনও ঢাঁর অতি বিশাল রূপ ধারণ আবার কখনও অতি সূক্ষ্মরূপ ধারণ করার ঘটনার উঙ্গেখ আছে। কোথাও আবার তাঁর দেহকে বজ্রের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। আবার কোথাও তিনি মানবদেহে, ব্রাক্মণ বেশে, সন্ন্যাসীর রূপে, বটুক বেশে আবির্ভূত रয়েছেন।
মানবরূপেই হোক অথবা বানরবেশে, তাঁর সূক্ষ্ম, ভয়ংকর ও বিরাট রূপ ধারণ করার কথা অনেক রামায়ণে আছে। শ্রীহনুমানজী জনকনन्দিনী সীতার কাছে সূক্ষ্মরূপে প্রকাশ হয়েছিলেন এবং তাঁকে আশ্বস্ত করার জন্য বিশাল সুন্দর দেহ দেখিয়েছিলেন। আবার লঙ্কা দহনের সময় বিকট রূপ ধারণ করেছিলেন।
সমুদ্র লঅ্ঘনের সময় শ্রীহনুমানজী নাগমাতা সুরসার বিশাল দেহ এবং মুখ দেখে তাঁর শরীরকে ভগবান বিষ্ণুর বামন অবতারের ত্রিপাদের মতো বিশাল আকার দিয়েছিলেন। আবার সুরসার কথা রাখবার জন্য অঙ্গুষ্ঠের চেহারা নিয়ে তাঁর মুখে প্রবেশ করে মুহূর্তে বেরিয়ে এসেছিলেন। লঙ্কা নগরীতে প্রবেশের সময়েও অতি লঘু রূপ ধারণ করেছিলেন (একটি মশার মতো)। অশোকবনে বৈদেহীর সামনে নিজেকে প্রকাশ করার সময় শ্রীহনুমানজী কি রূপ ধারণ করেছিলেন সে সম্বন্ধে অনেক মত বিরোধ আছে।
‘শ্রীহনুমানত্রাটক’-এ বর্ণনা আছে যে ওই সময় শ্রীহনুমানজী মশার চেহারা নিয়েছিলেন। বাল্মীকি রামায়ণে আবার বিড়ালের রূপ ধারণের কথা আছে। ‘শ্রীরঙ্গনাথ রামায়ণে’ ভারী সুন্দর বর্ণনায় বলা হয়েছে যে, অশোকবনে পোঁছে শ্রীহনুমানজী অঙ্গুষ্ঠ মাত্র চেহারা নিয়ে ভগবান বিষুণু যেমন সৃষ্টির অস্তে বটপত্রের উপর শয়ন করার রূপ ধারণ করেন, সেই রকম অশোকবৃক্ষের ঘন শাখায় অত্যন্ত কুশলতার সঙ্গে লুকিয়ে ছিলেন।
এবার আসা যাক তাঁর লঙ্কা দহনের সময় বিকট রূপ ধারণের কথায়। ভ্রাতা বিভীষণের পরামর্শে দশানন রাবণ যখন দূতরূগী শ্রীহনুমানের মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে লেজে আগুন লাগানোর সিদ্ধাস্ত জানালেন তখন শ্রীহনুমানজী তাঁর স্বাভাবিক রূপেই ছিলেন। কিন্তু তিনি অবাক হলেন যখন দেখলেন দশগ্রীব রাবগের এই ঘোষণায় রাক্ষসকুলের মধ্যে শোরগোল পড়ে গেল কারণ সবাই আগুন লাগানোর কাজে যোগদান করতে চায়।
সেই কারণে সবাই যে যার বাড়ি থেকে তেল, কাপড় এনে স্তূপীকৃত করতে লাগলো। শ্রীহনুমানজীর এইসব দেখে কৌতুক হলো এবং হঠাৎ তাঁর মনে হলো এ সবই বোধ হয় ঈশ্বরের ইচ্ছায় হচ্ছে। মনে হওয়া মাত্র শ্রীহনুমানজী তাঁর ‘সঙ্কল্প-বল’কে স্মরণ করলেন। তিনি তো ‘সঙ্কল্প-বলে’ সিদ্ধ।
সঙ্কল্প হওয়া মাত্র একটি অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে লাগলো। রাবণের সভা থেকে বেরিয়ে আশেপাশের গলি, প্রধান রাস্তা দিয়ে তাঁর লেজ বিস্তৃত হতে ওুরু হলো এবং এই লেজ বৃদ্ধির কারণে জমা করা তেল, বস্ত্র ইত্যাদি কম পড়তে লাগলো। সমস্ত লঙ্কা নগরী ক্রমে ক্রুে তেল ও বস্ত্রশূন্য হয়ে গেলো। রাজভাঞার থেকে মূল্যবান রাজবস্ত্র ও ঢেল আনা হতে লাগলো।
শ্রীহনুমানজীর এই লেজ বৃদ্ধির কারণ ঘটলো লোকচক্কুর অন্তরালে। দেবাদিদেব মহাদেব যখন তাঁর ইষ্টদেব প্রভু শ্রীরামের অবতার কালে তাঁর সেবার কার্য করার জন্য একাদশ রুদ্র অবতার শ্রীহনুমানজীর রূপে আবির্ভূত হতে যাচ্ছেন, তখন মাতা পার্বতীও তাঁর এই মহতী কাজে অংশীদার হতে চাইলে, দেবাদিদেব তাঁকে তাঁর পেছনে সর্বক্ষণ থাকার পরামর্শ দিলে তিনি রাজী হয়ে শ্রীহনুমানজীর লেজে অলক্ষে বিরাজ করার সিদ্ধাত্ত নিলেন। শ্রীহনুমানজী সঙ্কল্প করা মাত্র মাতা পার্বতীর কৃপায় তাই তাঁর লেজ ক্রমশ বাড়তে লাগলো।