Hanuman Chalisa is a timeless prayer that inspires unwavering faith in Lord Hanuman.
Hanuman Chalisa Chaupai 10 in Bengali with Meaning & Analysis
ভীম রূপ ধরি অসুর সঁহারে।
রামচন্দ্র কে কাজ সঁবারে।।
সারানুবাদঃ ভয়ানক আকার ধারণ করে রাক্ষসদের বধ করেছিলেন। প্রভু শ্রীরামচক্র্রের দেওয়া কাজ সম্পূর্ণ করেছিলেন।
ব্যাখ্যা : শ্রীহনুমানজী অশোকবনে, লঙ্কাপুরী জূালানোর সময় এবং রাক্ষসদের সঙ্গে যুদ্ধের সময় বিভিন্ন রকমের বিকটরূপ ধারণ করেছিলেন। শ্রীহনুমানজী ইচ্ছা করলেইই রূপ ধারণ বা পরিবর্তন করতে পারতেন। সমস্ত রামায়ণই এই কথা বলে যে, শ্রীহনুমানজী রাক্ষসদের বধ অত্যন্ত আক্রামক রূপ ধারণ করে করতেন। তাঁর লঙ্কা দহনের বিকটরূপ লঙ্কাবাসীরা কোনোদিনই ভুলতে পারেনি।
তাদের শ্রীহনুমান-ভীতি এতদূর অবধি পৌঁছেছিল যে যখন বালীপুত্র অঙ্গদ প্রভু শ্রীরামের দূত হয়ে শেষবারের মতো রাবণকে বোঝাবার জন্য লঙ্কাপুরীতে পোঁছেছিলেন তখন লঙ্কাবাসীরা তাঁকেই শীহনুমান মনে করে ভয়ে চতুর্দিকে পালাতে শুরু করেছিলো। গোস্বামী শ্রীতুলসীদাসজী লিখছেন:
“ভয়উ কোলাহল নগর মঝারী।
আবা কপি লঁকা জেঁহি জারী।।”
শ্রীহনুমানজীর জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য প্রভু শ্রীরানের কাজ সম্পন্ন করা। প্রভুর কাজকে সিদ্ধ করার জন্য তাঁর চেয়ে উপযুক্ত আর কেউ ছিল না। পরাৎপর ব্রহ্ম ভগবান শ্রীরামের পরম ভক্ত ছিলেন শ্রীহনুমানজী। নবধাভক্তির সপ্তম-সাধন ‘দাস্য’ তিনি আদর্শ উদাহরণ। স্বয়ং প্রভু শ্রীরাম মুক্ত কঠ্ঠে বিশ্বকে জানিয়েছিলেন, “তুম মম প্রিয় ভরতহি সম ভাই।” শ্রীরামের কাজ সম্পন্ন করার জন্য কখনও সূক্ষ্নরূপ, কখনও বিপ্ররূপ, কখনও বিকটরূপ, আবার ভীমরূপ ধরেছেন।
কখনও বা বন্ধন স্বীকার করে মুক্তও হয়েছেন। তিনি ‘জ্ঞনিনামগ্রগণ্যম্’ হওয়ার কারণে অনেক জটিল সমস্যার শাস্ত্রবিধি সমাধানও করেছেন। প্রভু শ্রীরামের কাজ করার জন্য যেমন শ্রীবিভীষণকে অনুপ্রাণিত করেছেন তেমনই তাঁর শিক্ষাগুরু সূর্যদেবের আদেশক্রমে মহারাজ বালির ভাই সুগ্রীবের মার্গদর্শনও করিয়েছেন। তিনি ছিলেন ‘অতুলিতবলধধামং’।
তাঁর মুষ্ঠাঘাত লঙ্কিনী, রাবণপুত্র মেঘনাদ, রাবণভ্রাতা কুস্তকর্ণ ও স্বয়ং রাবণকে মূর্চ্ছিত করেছে। প্রতু শ্রীরামের একজন সেবকের এই ক্ষমতা তাদের শ্রীরামের প্রতাপ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। প্রভু শ্রীরামের কাজ সম্পন্ন করার শ্রীহনুমানজীর দৃঢ় সঙ্কল্প আমাদের তাত্ত্বিক দিক দিয়ে এক নতুন প্রেরণা জোগায়।
শ্রীহনুমানজীর ‘ভীমরূপ’ যেমন রাক্ষসকুলের ত্রাসের কারণ ছিল, তেমনই ভগবদ-উন্মুখ ব্যক্তির অস্তঃকরণে স্থিত কাম, ক্রোধ, লোভ, লোহ, মাৎসর্য ও অহংকার প্রভৃতি আসুরিক স্বভাব, যা শত চেষ্টাতেও বশ মানে না এবং ভক্তির পথে নিরন্তর চেষ্টাতেও বাধার পথ ছাড়ে না, তাদের নির্মূল করার দৃঢ় সঙ্কল্পের উৎসস্বরূপ হলেন শ্রীহনুমানজী। জনকनন্দিনী সীতা সাক্ষাৎ ভক্তি এবং ভগবদ্কৃপার মূর্তি।
ঢাঁর সামনে শ্রীহনুমানজী ছোটো আকারে অবস্থান করেন যা ভক্তিপথের যাত্রীকে নিরভিমানী হওয়ার প্রেরণা দেয় ; আবার লঙ্কাধিপতি রাবণ, যিনি অহংকার ও কামনার প্রতীক, তাঁর কছে শ্রীহনুমানজী বিশাল এবং ভয়ানকরূপ ধারণ করেন। তেমনি यদি নিরভিমানী ভক্তের এই নম্রতা ও বিনয় স্বভাবকে কেউ তাঁর দুর্বলতা ভেবে তার ওপর অত্যাচার করে, তাহলে শ্রীহনুমানজীর মতো ভক্ত তার পৌরুষ অবশ্যই দেখাতে পারে। পরিশেযে এই টোপাই আমাদের দৃত়ভাবে আশ্বন্ত করে যে নানা প্রকার বিঘ্নের কারণে আমাদের উৎসাহ ৫ ঊদ্যম যেন শিখিল না হয়। বরং অত্তন্ত সাহস বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে এর মোকাবিলা করলে সাফল্য নিশ্চিত।