Hanuman Chalisa Chaupai 20 Meaning in Bengali

Some families have a tradition of reciting the Hanuman Chalisa Lyrics together every Tuesday.

Hanuman Chalisa Chaupai 20 in Bengali with Meaning & Analysis

দুর্গম কাজ জগত কে জেতে।।
সুগম অনুগ্রহ তুম্হরে তেতে॥

সারানুবাদ : বিশ্বে যত কঠিন কাজ আছে বা হয়, আপনার কৃপায় সেই সব কাজ তত সহজ হয়ে যায়।

ব্যাখ্যা : শ্রীহনুমানজীর ভক্তরা শ্রীহনুমান চালীসার এই চৌপাঈটিকে তাঁর হৃদয় রূপে মান্য করেন।

শ্রীহনমানজীর কथ: মনে এলেই তাঁর সঙ্কটমোচল গুণটি সবার আগে মনে পড়ে। এই চৌপাঈটির ভাবপূর্ণ পাঠ বা গান এবং তাঁর স্মরণ ভচেক্তর হৃদয়ে এক অভূতপূর্ব আত্মবিশ্বাস এবং অস্তঃকরণে প্রসন্নতা নিয়ে আসে। আমরা, যারা সাংসারিক জীব, আমাদের দৈনनদিন জীবনে সমস্যা সদাই লেগে আছে। কখনও কখনও সঙ্কট অত্যণ্ত গভীর এবং তার সমাধান আরো কঠিন মনে হয়। সেই কঠিন সমস্যার সমাধান যখন সহজেই হয়ে যায়, তখন আমাদের কি প্রভুকৃপার অনুভব হয় না ?

যোগ বা সাধনপথের প্রণম্য সাধকরা একথা জোরের সঙ্গে বলেন যে, সাধনপথের পথিককে সর্বদাই জীবনের পিছনদিকে নজর দিয়ে ঈশ্বরকৃপার বা অদৃশ্য হাতের পরশের অনুভব নিতে হয়। মানুষের অহংকারনাশের এর চেয়ে ভাল পথ আর কিছু নেই। ঈপ্বরকৃপার এই অনুভব যার যত বেশি হয়, তার আল্পুত মনের আবেগপূর্ণ প্রার্থনা ততটাই তাকে তার ইষ্টকে টেনে আনতে সাহায্য করে।

এই বিশ্বে সব থেকে দুর্গম কাজ কোনটা বা কি হতে পারে ? স্বয়ং প্রভু শ্রীরামের যে কাজকে অত্যন্ত দুক্ষর মনে হয় তাই সবচেয়ে দুর্গম হওয়া উচিত। জনকনন্দিনী সীতার খোঁজ, ভাই লস্ষ্মপের শক্তিশেলে অচেতন হওয়া, এই ঘটনায় প্রভু শ্রীরামের অত্যন্ত চিচ্তিত ও ব্যথিত হয়ে রোদন করা এই ঘটনাগুলিকে কঠিন থেকে কঠিনতম পর্যায়ে নিয়ে গেছে।

একটিতে দেবী সীতার থ্থোজ যার কোনো সূত্রই কারও জানা নেই এবং সমস্ত ভারতবর্শের যে কোনো প্রাত্ত বা তার বাইরেও তাঁর গস্তব্য হতে পারে, অন্যটিতে সময় মাত্র, একরাত্রি এবং দূরত্ব ভারতের দক্ষিণ থেকে উত্তরের শীর্ষে এবং সমাধান সূত্র শক্রুর বৈদ্যর কাছে ; এর চেয়ে কঠিন সঙ্কটময় পরিস্থিতি আর কি হতে পারে?

প্রভু শ্রীরামের হৃদয় সদাই দ্রবীভূত থাকতো। কোমল হৃদয় ও অপার করুণার সাগর শ্রীরাম মর্যাদা পুরুযোত্তম হবার কারণে এই সবের বহিঃপ্রকাশের বিষয়ে সদা সচেতন থাকতেন। কিন্তু সেই তিনি ঢাঁর চোখের জলের বাঁধ আটকে রাখতে পারেননি কিছু কিছু মুহূর্তে। যেমন দেবী অহল্যার কাহিনী ঋষি বিশ্ধামিত্রের কাছ থেকে শুনে তাঁর চোখ ছলছল করে উঠেছিল এবং অশ্রুধারার বর্ষণ তিনি আটকাতে পারেননি। দেবী সীতার অপহরণ ও চাঁর

খোঁজজর সময় তিনি অশ্রুধারায় প্লাবিত হয়েছিলেন। কিল্তু ভাই লক্ষ্মণের শক্তিশেলে অচেত্ন হওয়া তাঁকে অত্যন্ত শোকগ্রস্ত করেছিলো এবং তিনি উচ্চেঃস্বরে রোদন করে ভাইয়ের সাথে মৃত্যুবরণের কথা পর্যন্ত বলে বিলাপ করছিলেন। এই কঠিন সঙ্কটময় অবস্থায় যখন সকলে দিশাহারা তখন প্রভু শ্রীরামের কাছে গিয়ে শ্রীহনুমানজী (প্রভু শ্রীরামের অর্রু ঢাঁকে অত্যন্ত বিচলিত করেছিলো)

যে কথা বলেছিলেন, তা তাঁর মতো বীররলে পুষ্ট নিভীক ব্যক্তির পক্ষেই বলা সম্ভব। ‘হনুমত্রাটক’ এ এর উল্লেখ আছে- শ্রীহনুমানজী বলেছেন, “প্রভু, আপনি আজ্ঞ করলে আমি স্বর্গ বা পাতাল থেকে অমৃত নিয়ে আসতে পারি, চাঁদকে নিংড়ে লক্ষ্মণের মুতে অমৃত ঢালতে পারি, সূর্যের কিরণ যাতে পৃথিবীতে পৌঁছতে না পারে তার ব্যবস্থা করতে পারি

(সূর্যকে পাতালে বন্দী করে রাখতে পারি) ; আর মৃত্যুলোকের দেবতা যমরাজকে ধরে কাঁচাই চিবোতে পারি।” একবার ভাবুন এও কি সম্তব ? চন্দ্রকে কি কেউ নিংড়োতে পারে ? নাকি যমরাজকে কেউ মারতে পারে? কিস্তু গোস্বামীজী মনে করেন এ সব করা শ্রীহনুমানজীর পক্ষে অবশ্যই সম্তব, কারণ “দুর্গম কাজে জগতকে জেতে, সুগম অনুগ্রহ তুমহরে তেতে”-এই তো শ্রীহনুমানজীর পরিচয়।

আগেই বলা হয়েছে যে, শ্রীশ্রীরামচরিতমানসে রামকথার প্রসঙ্গ এসেছে কখনও ভগবান শংকর ও দেবী পার্বতীর মধ্যে, কখনও ঋষি যাজ্ঞবক্ষ্য ও ঋষি ভরদ্বাজের মধ্যে, বা কাকভুশণ্ডি ও মহাগ্মা গরুড়ের মধ্যে। তো ভগবান শংকরের মুখ থেকে শ্রীহনুমানজীর এই কথা (‘হনুমত্রাটক’) শুনে দেবী পার্বতী ভগবান শংকরকে জিজ্ঞসা করছেন, “প্রভু, এটা কি করে সম্ভব ? শ্রীহনুমানজীর সব কাজের সিদ্ধির সাক্ষী তো আপনি (‘হোয় সিদ্ধি সাক্ষী গোরীসা’-হনুমান চালীসা), মৃত্যুর দেবতার মৃত্যু কি করে সম্ভব?

এখন ভেবে দেখুন স্বয়ং ভগবান শংকরের অবতার শ্রীহনুমানজী এবং দেবী পার্বতী তাঁর কাছেই জানতে চাইছেন। দেবাদিদেব মহাদেবের উত্তর তো ওনুন, “হে পার্বতী! এ সবই সম্ভব। কিস্তু এ সব কার প্রতাপে? এর মধ্যে হনুমানজীর কোনো স্পর্ধা নেই, এ সবই প্রভু শ্রীরামের প্রতাপ, যা কিনা কালকেও গ্রাস করতে পারে।” তাহলে দেখা যাচ্ছে শ্রীহনুমানজীর সব কাজের যিনি সাক্ষী, সেই ভগবান শংকর বলছেন সমস্ত দুর্গম ও অসম্তব কাজ

শ্রীহনুমানজী সিদ্ধ করতে সক্ষম। আমাদের জানতে ইচ্ছে করে এই অদ্ভুত ক্ষমতা শ্রীহনুমানজী কোথা থেকে পেলেন এবং এ্রীহনুমানজীর কৃপায় যখন দুর্গম/ কঠिन কাজ সরল হয়ে যায়, তখন সাধক বা ভক্ত কি করলে এ্রীহনুমানজীর অনুগ্রহ পাবেন? এই সম্বক্ধে অনেকের অটেক মত আছে যা অত্যন্ত স্বাভাবিক। কিন্তু মোটামুটি শ্রীহনুমানজীর কৃপাধন্য ব্যক্তিরা যা বলে থাকেন বা বিভিন্ন শাস্ত্র যে কথার উল্লেখ করে আমরা সেই দিকটির প্রতি একবার দৃষ্টি দিই।

সাধারণতঃ শ্রীহনুমানজীর ভক্তদের এটা বিশ্বাস বা ঢাঁরা মানেন যে, শ্রীহনুমানজীকে খুশি রাখতে পারলে, তিনি কিছু ‘চমৎকার’ করে কঠিন কোনো সমস্যার সমাধান অত্যন্ত সরল ভাবে করে দেবেন। শাস্ত্রকাররা এই কথা মানেন যে, কঠিন সমস্যার সহজ সমাধান শ্রীহনুমানজীর কৃপায় সম্ভব কিস্তু তাঁরা এই ‘চমৎকার’-এর তত্ত্তে বিশ্বাসী নন, যদিও আমার অত্যন্ত পরিচিতদের থেকে নিজের

জোগাড় করা তথ্য এই ঘটনার সাক্ষী যে বিশ্বাসে তো বটেই, অত্যন্ত অবিশ্বাসে করাও শ্রীহনুমান চালীসা পাঠ সাক্ষাৎ মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়ে এনেছে বা অবিশ্বাস্যভাবে সঙ্কট থেকে উদ্ধার করেছে যা কিনা কোনো ‘চমৎকার’-এর চেয়ে কম নয়। এই সমস্ত তথ্যের ওপর নির্ভর করে ভবিষ্যতে পাঠককুলের কছছে একটি বই প্রস্তুত করার ইচ্ছা আছে।

শাস্ত্রকাররা শ্রীহনুমানজীর ওপর লিখিত বিভিন্ন গ্রম্থ এবং তাঁর ভক্তদের উপলক্ধির কথা মাথায় রেখে বলেন যে-

(ক) শ্রীহনুমানজীর নিয়মিত উপাসনা তাঁর (শ্রীহনুমানজীর) সমস্ত সদ্গুণগুলিকে ধীরে ধীরে তাঁর ভক্তের মধ্যে প্রবেশ করায় এবং সেই সমস্ত গুণের লক্ষণযুক্ত ব্যক্তি তার পুরুষার্থ দ্বারা পরিণামে কঠিন কাজকে সরলভাবে সিদ্ধ করে। এই বিষয়ে শাস্ত্র বলে-

“বুদ্ধিবলং যশোধৈর্য নির্ভয়ত্বসরোগতা।
অयाড্যং বাক্যদূपবং চ হনুমৎ স্মরণৎ ভবেত।”

অর্থাৎ শ্রীহনুমানজীর চ্মরণ করলে মানুষের বুদ্ধি, বল, যশ, ধৈর্য, নির্ভয়তা, আরোগ্যতা, বিবেক আর বাক্যকৌশল ইত্যাদি গুণ এসে যায়।

(খ) এখন প্রশ্ন জগে যে শ্রীহনুমানজীর অনুগ্রহ আরও সহজভাবে কি পাওয়া সম্ভব কারণ শ্রীহনুমানজীর উপাসনার পরিধি এবং বিস্তৃতি বিভিন্ন

গ্রন্থে বিভিন্ন ভাবে বিবৃত হয়েছে। এই বিষয়ে শ্রীহনুমানজীর সাধনসিদ্ধ ভক্তদের সম্মিলিত রায় হলো যে শ্রীহনুমানজীর অনুগ্রহ লাভের সবচেয়ে সরল মার্গ रुला :

শ্রীরামনাম মজ্ত্রের অবিরত জপ;
শ্রীরামকথা শ্রবণ, অধ্যয়ন ও চিন্তন বা মনन।

শ্রীহনুমানজীর উপাসনার অর্থ এই নয় যে চ্ঁর মূর্তির সামনে হাত জোড় করে বসে থাকা এবং কোরো ‘চমৎকার’-এর প্রতীক্ষা করা। এই পথের মহাজনরা বলেন যে, ইষ্টদেবতার নিয়মিত মনन (তাঁর নাম, রূপ, লীলা, করুণা, প্রেম, তাঁর ভক্তের লীলা ইত্যাদি) তার মধ্যেকার ভয়, চিন্তা অনেকটা দূর করে এবং সমস্যা নোকাবিলা করার মানসিক উৎসাহ ও হিম্মত জোগায়। মহাজনের।

এই কথাও বলেন যে, মানুষ যদি তার নিজের ভেতরের সামর্থ্য ও শক্তিকে সমস্যার কঠিনতার থেকে ইীন মনে করে, তবে কোনো পুরুষার্থই তাকে তার ইপ্সিত লক্ষ্যে পোঁছতে দেবে না। শ্রীহনুমানজী সব সময় ডাঁর সামর্থ্য ও শক্তি সম্বক্ধে দৃঢ় নিশ্চয় ছিলেন এবং এও জানতেন যে অবিরাম রামনাম জপ ও ইট্টের মনন তাঁর সামর্থ্য ও শক্তিকে আরও বলশালী করেছে। প্রভু শ্রীরামই তাঁর শক্তি ও সামর্থ্য এই বিশ্ধাস তাঁকে কঠিন থেকে কঠিনতম সময়ের মোকাবিলা করতে সাহায্য করেছে।

শ্রীহনুমানজীর এই মানসিক দৃঢ়তা ও সংকল্পে অটুটতার প্রধান কারণ হলো তাঁর আজন্ম ব্রস্মার্য পালন। তার অগাধ শক্তিস্রোতেরও এটাই কারণ। ব্রস্মাচর্য রক্ষা ও পালন করা কলিযুগের এক কঠিনতম ব্রত। এই ব্রত পালনকারী দিব্য দুর্লভ গুণের অধিকারী হয়।

শ্রীহনুমানজী সব সময় লক্ষ্য রাখেন যে রামভক্তদের যেন দুঃখ, বেদনা ইত্যাদি না ঘটে বা তারা পরিশ্রাত্ত বা নাজেহাল না হন। প্রভু শ্রীরামের কাছে তাদের আর্তি পোঁছোনোর আগেই তিনি তাদের সমস্যা মিটিয়ে দেবার সর্বদা চেষা করেন।

Leave a Comment