The Hanuman Chalisa Lyrics in English is a symbol of devotion and faith in Lord Hanuman’s grace.
Hanuman Chalisa Chaupai 24 in Bengali with Meaning & Analysis
ভূত পিশাচ নিকট নহিঁ আবৈ।
মহাবীর জব নাম সুনাবৈ॥
সারানুবাদ : শ্রীহনুমানজীর নাম উচ্চারণ করলে, ভূত, পিশাচ ইত্যাদি সামনে আসতে পারে না।
ব্যাখ্যা : আমরা জানি যে, এই মর্ত্যলোকে ত্রিতাপ জ্বালায় আমরা সবাই কম-বেশি ভুগছি। এই ত্রিতাপ অর্থাৎ আধিদৈবিক, আধিভৌতিক এবং আধ্যাছ্মিক বিষয়ক্তলি থেকে নিরস্তর বাধা-বিপত্তির আমরা সর্বদাই মুখোমুখি হচ্ছি। এই চৌপাঈ ও পরের দুটি চৌপাঈ (অর্থাৎ ২৫ ও ২৬) আমাদের দেখিয়ে দিচ্ছে যে, কিভাবে আমরা এই বিপত্তিগুলি থেকে সহজে নিস্তার পেতে পারি।
প্রথমে দেখা যাক এই ভূত, পিশাচ আদি নামক বস্তুগুলি কি। এরা বস্তুতঃ বায়ুমণ্ডলে দিশাহীন বিচরণকারী কিছু দেহরহিত (সূক্ষ্মদেহ) চেতনা যারা নিজেদের প্রবল কামনা বাসনার তাড়নায় তাড়িত হয়ে তা পূর্তির উদ্দেশে অন্য স্থূলদেহের সন্ধানে ঘুরে বেড়ায়। এদের লক্ষ্য থাকে দুর্বল, অশুচি ও তামসিক বৃত্তির আধিক্য সম্বলিত মনুষ্য দেহ। দেহ রহিত এই চেতনার মনুষ্য দেহে উপস্থিতি, সেই ব্যক্তির রাজসিক বৃত্তিকে সহজেই তমোভাবাপন্ন করে দেয় এবং যতটুকু সাত্ত্বিকভাব আছে, তাকেও ক্রমে তামসিক করে দেয়।
শক্তি অতিদ্রুত দেহ ছেড়ে পালাতে চায়। এর মুখ্য কারণ দুটি :-
- শ্রীহনুমানজী নিজে বায়ুপুত্র হবার ফলে বায়ুমণ্ডলে বিচরণকারী এই তামসিক শক্তির উপর সহজেই লাগাম লাগাতে পারেন কেন না এই শক্তির চরিত্র ও তার মুক্তির উপায় তাঁর সহজেই জানা হয়ে যায়।
- মনোবিজ্ঞনীীদের এই মত যে, শ্রীহনুমানজীর উপাসকদের মধ্যে ক্রমে ক্রনে শ্রীহনুমানজীর কিছু কিছু গুণের প্রভাব দেখা যায় যা তাদের শারীরিক,
মানসিক, বোদ্ধিক এবং আধ্যাদ্মিক ভাবকে দৃঢ় করে। ফলে ভূত, পিশাচ ইত্যাদি যারা তামসিক ভাবের হয়, তারা উপাসকের কাছে ঘেঁষতে পারে না। এছাড়াও ঢাঁর উপাসকরা ঢাঁর উপাসনার কারণে সাত্তৃকতার পথে চলতে থাকে। ফলে তামসিক বৃত্তির অধিকারী ভূত, পিশাচ ইত্যাদি তার ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। যদি কারোর অজান্তে শ্রীহনুমানজীর নাম করার আগে ঢুকেও থাকে, তাহলে ঢাঁর নাম-জপ অস্তঃকরণে করতে থাকলে তা শীঘ্রই দেহ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
আমার নিজের দেখা বেশ কয়েকটি ঘটনা এই সাক্ষ্য দেয় যে, অজান্তে ঢুকে যাওয়া এই তামসিক সূক্ম্মদেহ (যাকে ভূত, পিশাচ ইত্যাদি অনেক নামে ডাকা হয়) শ্রীহনুমানজীর নাম নিরন্তর জপ করায় দ্রুত ছেড়ে পালিয়ে গেছে এবং সেই সব ব্যক্তিরা সবইই এখন স্বাভাবিক সুস্থ ও সাত্ত্বিকভাবে সমৃদ্ধ।
আমরা যদি এই চৌপাঈয়ের আধ্যাগ্মিক দিক দিয়ে বিচার করি তবে দেখা যাবে যে, মানুষের ‘অহংকারে’র চেয়ে ভয়ংকর কোনো ভূত এবং ‘ক্রোধে’র চেয়ে বিনাশকারী কোনো পিশাচ হতে পারে না। শ্রীহনুমানজী স্বয়ং বল-বুদ্ধি-বিক্রমের নিধান হওয়া সত্ত্তেও অত্যন্ত বিনম্র, তাই তাঁর নাম ওুনলে কোন অতিবড় অহংকারী ও ক্রোধিত ব্যক্তি তাদের নিজেদের আচরণের জন্য লজ্জিত বোধ না করবেন ?
লঙ্কাপতি রাবণের সভায় শ্রীহনুমানজীকে ঘোর অপমান করা হলেও এবং তাঁর ক্রোধ উৎপাদনের সব রকমের চেষ্টা করা সত্ত্রেও তিনি ছিলেন শান্ত এবং তাঁর অবিচলিত নিঃশঙ্ক রূপ দেখে সমস্ত সভা হতচচকিত হয়ে গিয়েছিল। আর তাই ছোট ছোট বিপরীত পরিস্থিতিতে নিজেদের ক্রেনধী ও অহংকারী হতে দেখলে আমাদের কার না লজ্জা লাগবে ?
এই চোপাঈ-এর আর একটি দৃষ্টিভঙ্গির দিকেও আমরা নজর দিতে পারি। यদি ভূত বলতে আমরা অতীত বুঝি এবং পিশাচ বলতে অতীতের করা তামসিক ও নিন্দনীয় কাজ বুঝি, তাহলে একথাও সত্য যে, সেই সমস্ত নিন্দনীয় অতীত কর্ম আমাদের সবসময় আধ্যাছিক পথে মনঃসংযোগ ঘটানোর পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু শ্রীহনুমানজীর নাম জপ সেই দুর্বলতাকে সাধনার পথে কাছে আসতে দেয় না এবং তাকে বিচলিত করে না।