Hanuman Chalisa Chaupai 27 Meaning in Bengali

Devotees often meditate on the meaning and significance of the Hanuman Chalisa with Meaning.

Hanuman Chalisa Chaupai 27 Meaning in Bengali

সব পর রাম তপস্বী রাজা।
তन কে কাজ সকল তুম সাজা।

সারানুবাদঃ তপস্বী শ্রীরাম হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। আপনি ঢাঁর সব কাজই সুষ্ঠুভাবে সম্পন করেছেন।

ব্যাখ্যা : এই চৌপাঈটি এক বিশেষ অর্থ বহন করছে :
‘সব পর’ এর সাংস্কৃতিক অর্থ হল (১) সবচেয়ে উত্তম বা সর্বশ্রেষ্ঠ ; (২) আরেকটু গভীরে এর অর্থ হলো সমস্ত ব্যক্তি, বস্তু বা বিচারের ঊর্দ্ধে। প্রশ্ন হলো, শ্রীহনুমানজী প্রভু শ্রীরামের সমস্ত গুরুতর কাজ যা সবসময় সঙ্কটপূর্ণ ও আপাত অসম্ভব তা অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে সর্বদইই সম্পন্ন করেছেন, তাহলে ‘তপস্বী রাজা’ এই রূপটি এক্ষেত্রে প্রভু শ্রীরামের ক্ষেত্রে কেন্ন ব্যবহার করলেন ?

আর একটা প্রশ্ন আমাদের মনে জাগা থুব স্বাভাবিক তা হলো অনস্ত গুণের আধার, জ্ঞানী, বলবান, পরাক্রমী ও যশস্বী শ্রীহনুমানজী স্বতন্ত্র দেবতা হিসাবে পূজিত হওয়ার পূর্ণরূপে সক্ষম হওয়া সত্ত্তে, সর্বদা প্রভু শ্রীরামের চরণে সর্মি্পিত ছিলেন কেন ?

এর উত্তর খুঁজলেই আমরা এই চৌপাঈ-এর অস্তর্নিহিত অর্থ বা ব্যাখ্যা বুঝতে পারবো। শ্রীহনুমানজী, প্রভু শ্রীরামের প্রথম দর্শনের পর থেকেই তাঁকে খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন। প্রভু শ্রীরামের বিশেষ কিছু গুণ তাঁকে প্রথনে তাঁর দিকে আকর্ষিত করে এবং পরে তাঁকে সদা ভাববিভোর করে রাখে, যেমন :

(এক) প্রভু শ্রীরামের নম্রতা- রাজপুত্র হরয়ও নিযাদরাজ গুহক, নাবিক কেবট, পথের মধ্যে সাক্ষাৎ হওয়া গ্রামবাসীগণ, সমস্ত বানর ও ঋক্ষদের সঙ্গে তাঁর প্রেমময় ব্যবহার শ্রীহনুমানজীর হৃদয় ছুঁয়ে যেতো। (প্রভু শ্রীরাম লঙ্কাজয়ের পর অযোধ্যা ফেরার পথে মিত্র গুহক, নাবিক কেবট সহ সমস্ত গ্র/মবাসীগণের সঙ্গে দেখা করে যান।)

(দুই) প্রভু শ্রীরামের সরলতা- একদিকে তাঁর অপার করুণা যেমন দেখা যেত দেবী অহন্যা, শবরীর মতো ভক্তদের ক্ষেত্রে, তেমনি যুদ্ধক্ষেত্রে রাক্ষসদের নিধনের সময় তাঁর চেহারা ছিল দেখার মতো। শ্রীহনুমানজী তাঁর এই সরলতা দেখেশনে ভাববিভোর হয়ে যেতেন।

কিল্তু ঢাঁর যে গুণে এীহুমানজ্জী অত্যন্ত প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং ঢাঁকে প্রভুর কাজ সম্পন্ন করার সবসময় প্রেরণা দিত তাহল তাঁর (প্রভু ঐীরাढর) মানসিক ও বাচিক কষ্ট স্বীকার, তাকেই বলে ‘তপ্’। কেবল রাজা অথবা কেবল তপস্বী হওয়া কঠিন নয়, কিস্তু একাধারে রাজা এবং তপস্বী হওয়া এবং এই দুইয়ের কর্তব্যকে. সঠিকভাবে পালন করে ‘তপস্বী রাজা’ হওয়া অত্যস্ত বঠিন কাজ। ধর্মের সংরক্ষণ, সামাজিক তথা আধ্যাগ্মিক মূল্যবোধের পরাকাষ্ঠা দেখানো এবং ভবিষ্যাতের রাজা ও প্রজার জন্য এক উচ্চ আদর্শ স্থাপন ছিল প্রভু শীরীামের মূলমন্ত্র।

চৌদ্দ বছর বনবাস যা কিনা একটু চেষ্টা করলে বা চাইলেই বন্ধ করা যেতো, তা তিনি করেননি। চৌদ্দ বছর বনবাসের সময়ও সমস্ত সুযোগ সুবিধা অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে অস্বীকার করে তপসস্বীর মতো দিন কাটিয়েছেন। প্রভু শ্রীরাম জনকন্নি্দিনীর পবিত্রতার সন্বন্ধে নিঃসনেদেহে হওয়া সত্ত্বেও প্রজাদের ভাবনার মূল্য দিতে, তাঁকে ত্যাগ করার কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং বাকি জীবন তাঁর বিয়োগে দুঃখে কটিয়েছিলেন অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপন করে। প্রভুর এইসব গুণ, বিশেষতঃ তাঁর তপস্বী বেশে কাটানো বিভিন্ন ঘটনাপুঞ্জ শ্রীহনুমানজীর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে হয়েছে এবং প্রভুর কঠিন কাজগুলি অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে সম্পল্ন করেছেন।

শ্রীহনুমানজীকে জড়িয়ে সাধু-সন্তদের রক্ষার অনেক কাহিনী আছে। সন্ত কবীরের একটি ঘটনা এখানে উল্লেখ করবো। আমরা জানি যে কবীরের পর্ণকুটির বেনারসে অবস্থিত ছিল। তাঁর খ্যাতি তখন মধ্যগগনে। তিনি কাশীর বিখ্যাত রামাইয়া সম্পূূদায়ের গুরুর কাছে নাম দীক্ষা পেয়েছেন এবং তাও অত্যন্ত অদ্ভুতভাবে।

কবীরের স্বভাব ছিল প্রত্যেক সন্ধ্যায় ভজন-কীর্তন করার এবং তা গড়িয়ে রাত্রি হয়ে যেতো তাঁর ভজনের অন্য সঙ্গীরা চলে গেলেও তিনি একাই উচ্তস্বরে নাম-গান করতেন। তাঁর পর্ণকুটিরের পাশেই ছিল এক বেশ্যা নর্তকীর বাড়ি। রাত্রি বাড়ার সাথে সাথে সেই নর্তকীর নাচ গানে মাদকতা আনার দরকার হতো তার খদ্দেরদের খুশির জন্য। সন্ত কবীরের উচ্চস্বরে ভজন তার সেই কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াত। একদিন সেই নর্তকী তার মোহগ্রস্ত গ্রাহককে

বিরক্ত হয়ে বলল, “কবীরের কীর্ডন আমার মাদকতা সৃষ্টির চেষ্টাতে বাধার কারণ হচ্ছে।” এই শনে সেই মদ্যপ যুবক গ্রাহক নর্তকীকে খুশি করার জন্য বাইরে বেরিয়ে কবীরের পর্ণকুটিরে আগুন ধরিয়ে দিল। কবীর তাঁর বাড়িতে আগুন দেখে স্বগতোক্তি করে বললেন, “এটা কি রকম হলো? ভক্তের কুটীয়ায় আগুন ? ঠিক আছে, যেমন প্রভুর ইচ্ছা।” এরকম ভেবে তিনি তাঁর কুটীয়া ছেড়ে সামনের এক টৌমাথায় এক গাছের তলায় গিয়ে বসে আবার কীর্তন শুরু করলেন।

শ্রীহনুমানজীর কীর্তন অত্যন্ত প্রিয়। তিনি ভজনে কোনো বিঘু একদম পছন্দ করেন না। পবনপুত্র বাতাসের দিশাই বদলে দিলেন। মুহুর্তে সেই আগুন কবীরের কুটীয়া ছেড়ে নর্তকীর বাড়িকে গ্রাস করলো। কবীরের কুটীয়ার অনেকটাই বাঁচলো কিস্ত নর্তকীর বাড়ি দাউ দাউ করে জ্বলতে লাগলো। নর্তকী ঘাবড়ে গিয়ে দৌড়ে কবীরকে জিজ্ঞেস করলো, “কবীর! এটা কি হলো?

আমার বাড়িতে কি করে আগুন লাগলো?” কবীর বললেন, “এ তো মনে হচ্ছে দুই প্রেমিকের লড়াই। এর মধ্যে আমি কি করতে পারি ?” কিছুক্ষণের কথা কাটাকাটির পর নর্তকী রেগে গিয়ে বললো, “তোমার প্রেমিক প্রেমের কি বোবে ?” কবীর শধু হেলে বললেন, “তুমি আমার সাথে কীর্তনে লেগে যাও। দেখবে আমার প্রেমিক তোমারও প্রেমিক হয়ে গেছে।”

Leave a Comment