Hanuman Chalisa Chaupai 29 Meaning in Bengali

Reciting the Hanuman Chalisa Lyrics is a practice that unites Hanuman devotees in their devotion to the Lord.

Hanuman Chalisa Chaupai 29 in Bengali with Meaning & Analysis

চারোঁ যুগ পরতাপ তুম্হারা।
হু পরসিদ্ধ জগত উজিয়ারা।

সারানুবাদ : সমস্ত জগতেই এ কথা প্রসিদ্ধ আছে যে চার যুগেই আপনার প্রতাপ সমুজ্জৈভভাবে বর্তমান।

ব্যাখ্যা : আমাদের অজানা নয় ভে শীরনুমানজী ‘অমর’। সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলি চার যুগেই তাঁর অবাধ উপস্থিতি থাকে কোনো না কোনো রূপে।

  • সত্য যুগে : তিনি ঢাঁর মূল স্বরূপ অর্থাৎ ভগবান শঙ্কর।
  • ত্রেতা যুগে : প্রভু শ্রীরামের ভক্তশ্রেষ্ঠ ও দূতরূপে পরিচিত।

(৩) দ্বাপর যুগে : তৃতীয় পাঙ্যব অর্জুনের রথের ধ্বজাতে তিনি অবস্থিত যার জন্য াঁঁর রথের আর এক নাম ‘কপিষ্বজ’। ভগবান শ্রীকৃষণ কুরু-পাগুবের যুদ্ধ শেফে অর্জুনকে দ্রুত রথ থেকে নামডে বললেন এবং শীরুহুমানজীকে আহ্বান করলেন ধ্বজা থেকে নেমে আসতে। মুহূর্তে সেই রথ আগুনে পুড়ে ছই হয়ে গেল। অর্জুন এই সব দেখে অবাক হয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করায়, শ্রীকৃষ্ণ বললেন, “মহাবীর কর্ণ ও পিতামহ ভীপ্মের বাণের তীব্রতাকে শ্রীহনুমানজী এতদিন নিজের মধ্যে ধারণ করে রেখেছিলেন যে কারণে এই রথ অক্ষত ছিল। এঁদের বাণের এত জোর ছিল যে রথ একশো হাত পেছনে চলে যেতো কিন্তু শ্রীহনুমানজীর কারণে তা হয়নি।”

(8) কলি যুগে : যেখানে প্রভু শ্রীরামের কথা হবে, তাঁর স্মরণ-মনন-ভজনকীর্তন হবে সেখানেই শ্রীহনুমানজী অবশায উপস্থিত হবেন।
यত্র তত্র রঘুনাথকীর্তনং তত্র তত্র কৃতমসगতকাঞ্জম্।
বাষ্পবারিপরিপূর্ণলোচনং মরুতিং নমত রাক্ষসাত্তকম্। — (ख्रीरनूमৎ-ग्ठবन)

অর্থাৎ যেখানে যেখানে শ্রীরঘুনাথের (নাম, রূপ, গুণ, লীলা আদি) কীর্তন করা হয়, সেই সেই জায়গায় করজোড়ে নতমস্তক হয়ে, অশ্রঞপূর্ণ নয়নে যিনি সদা উপস্থিত থাকেন সেই রাস্ষসবংশের অন্তকারী পবননন্দনের উপ্দেশ্যে সকলেইই প্রণাম নিবেদন করুন।

শ্রীহনুমানজী বায়ুপুত্র হওয়ায় তিনি সর্বব্যাপী। পঞ্চভূতের মধ্যে আর যারা আছেন যथা ভূমি, সমুদ্র (জল), আকাশ এবং অগ্নি এঁদের একটা সীমা আছে যার মধ্যে এঁদের থাকতে হয়, কিন্তু বায়ুর কোনো সীমা নেই।। তাই তার গতি অবাধ এবং প্রচণ্ড বেগশালী। তই শ্রীহনুমানজী স্বতন্ট্র ও সীমাহীন। তাঁর উপস্থিতি তাই যে কোনো সময় যে কোনো জায়গায়, যে কোনো রূপে হতে পারে। সবটাই তাঁর ইচ্ছাধীন।

গোস্বামীজীকে তিনি প্রথম দর্শন দেন এক অতিবৃদ্ধ হিসাবে, দ্বিতীয় পাগুব ভীমকে তিনি দর্শন দেন এক পিঙ্গল চেহারার বৃদ্ধ বানর হিসাবে। অনেক ভগবৎদর্শী শ্রীহনুমানজীর পাবন সান্নিধ্য উপল্ধি করেছেনে শীরামের লীলাকথায় বা ভজনে আবিষ্ট অবস্থায়। এই লেখকের একবার সেই সৌভাগ্য হয়েছিলো।

যে চার বর্ণের কথা আহরা শাস্ত্রচর্চা থেকে জানতে পারি যথা ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র, শ্রীহনুমানজীর এই চার বর্ণের যে বিভাজিত কর্ম অর্থাৎ ব্রাহ্মণের শাস্ত্র অধ্যয়ন, অধ্যাপন, সমাজে আধ্যাত্মিক মূল্যের সংরহ্ষণ ইত্যাদি, ক্রত্রিয়ের সমাজ সুরক্ষা, ও পালন, বৈশ্যের কৃষি, গোরক্ষা বা ব্যবসা বাণিজ্য ইত্যাদি এবং শূদ্রের সেবাকার্য প্রভৃতি, তা যুগের সঙ্গে তাল রেখে এই চাররূপেই তাঁর পরিচয় রেখেছেন।

প্রথমবার তিনি প্রভু শ্রীরাম ও লক্ষ্মণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ব্রাহ্মা রূপ ধরে। তাঁর অসাধারণ পাঞ্তিত্য তাঁদের দুজনকেই সদা মুগ্ধ করে রেখেছিল। যে সমস্ত ক্ষত্রিয় রাজা সত্য ও ন্যায়ের পথে থেকে রাজ্যশাসন করতেন বা করছেন (‘রাজা’র সংজ্ঞা এখন পাল্টে গেছে), শ্রীহনুমানজী সব সময় তাঁদের রক্ষা করার জন্য তৎপর। যাঁরা ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি করেন তাঁদের বাক্চাতুর্যতা ও প্রতিপক্ষের মনের ভাব বুঝে নেওয়া অতি জরুরি। মজার কথা হলো এই দুটি গুণই শ্রীহনুমানজীর মধ্যে প্রচুর আছে। আর শূদ্রর সেবাকার্য – বলা বাংল্য শীরুহুমানজী প্রভু শ্রীরামের সেবক হিসাবেই শুষু নয়, সমগ্র মানব-সমাজের নিপুণ কল্যাণকারী হিসাবে তাঁর অবদান রেখেছেন।

প্রাচীন ঋষি ও মনীষী সমাজ মানব-সমাজের সর্বাঙ্গীণ বিকাশ ও আনন্দলাভের জন্য মানব-জীবনকে চার ভাগে ভাগ করেছিলেন, যথা ব্রস্চার্য, গার্হস্থ, বানপ্রস্থ ও সন্য্যাস। শ্রীহনুমানজী ব্রদ্মচর্যের এক আদর্শ স্বরূপ। তিনি যাঁদের মধ্যে বিচরণ করতেন তাঁরা সবাই গৃহস্থই ছিলেন (প্রভু শ্রীরাম, সুগ্রীব, বিভীষণ ও অন্যান্যরা)। শ্রীহনুমানজীর চরিত্র গৃহস্থদের একথা শেখায় যে বিবেকপূর্ণ বিষয় উপভোগ ও ইষ্টদেবের স্মরণ-মনন এক আনন্দপূর্ণ জীবনের দ্বার তাদের সামনে খুলে দেয়।

(বানররাজ সুগ্রীব ও বিভীষণ বিভিন্ন সময় ও ‘বানপ্রস্থ’র প্রাসঙ্গিকতা খালি শাস্ত্রের পাতায় খুঁজে পাওয়া যায়, বিশেষ করে বানপ্রস্থ। এই বানপ্রস্থর প্রস্তুতি অনেক আগে থেকে নিতে হয়। এর জন্য মরের জোর অত্যন্ত জরুরি। খুব ধীরে ধীরে সংসারের বিষয়গুলি মানসিকভাবে ছাড়তে হয় এবং নিয়মিত নিজেকে জানার চেষ্টায় মন দিতে হয়। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ঢাঁর ‘চতুঃশ্লোকী ভাগবতে’ ব্রস্মাকে বলেছেন যে, ব্রহ্মা-জিজ্ঞাসা বা

আছ্ম-জিজ্ঞাসা যার মধ্যে জাগবে, ধরে নিতে হবে তার মানসিক শান্তির যাত্রা উত্তমরূপে শুরু হয়ে গেছে। গোস্বামীজী বলছেন শ্রীহনুমানজীর স্মরণ এই সময় খুর কাজ দেয়। আর সন্ন্যাস শুধু গেরুয়া বসন পরা বা সংসার ত্যাগ নয়, এর বৃহত্তর অর্থ হলো সংসারে থাকা বা না থাকা, এই দুই-অবস্থায় বেশির ভাগ সময় আতু-উন্নতি এবং ঈশ্বর অনুভূতির কাজ সময় দেওয়া। শ্রীহনুমানজী তাঁর স্মরণ-মননকারীদের এই পর্যায়ে পরিপূর্ণ ‘শরণাগতি’র মার্গদর্শন করান এবং নিজে হাতে ধরে তাদের প্রভুর (নিজ নিজ ইষ্টদেব/ দেবীর) চরণে সর্ম্পিত করান।

Leave a Comment