The Hanuman Chalisa Pdf is a revered devotional hymn dedicated to Lord Hanuman.
Hanuman Chalisa Chaupai 30 in Bengali with Meaning & Analysis
সাধু সন্ত কে তুম রখবারে।
অসুর নিকন্দন রাম দুলারে।
সারানুবাদ : সাধুসজ্জনগণের আপনি রক্ষাকর্তা, রাক্ষসদের বিনাশকারী এবং শ্রীরামচক্ত্রের একান্ত প্রিয়পাত্র।
ব্যাখ্যা : এই চৌপাঈটি শ্রীহনুমানজীর চরিত্রের একটি বিশেষ দিক দর্শায়। আমরা ২১ নম্বর চৌপাঈতে পের়েছি ‘রাম দুয়ারে তুম রখবারে’ আবার এখানে পাচ্ছি ‘সাধু সন্ত কে তুম রখবারে’। তাহলে আমরা কি এই দুটি চৌপাঈ-এর মূল ভাবকে নিয়ে এই মতে আসতে পারি না যে, প্রভু শ্রীরামের দুয়ার অবধি পোঁছতে হলে অর্থাৎ রামময় হওয়ার জন্য সাধু বা সণ্ত হওয়া জরুরি এবং শ্রীহনুমানজী সেই সাধু বা সন্তদের শুধু রক্ষা করেন না,
উপরন্তু তাঁদের হাত ধরে রাম-অনুগত বা পরমাত্ম-রস আস্বাদনের ব্যবস্থা করে দেন ? কারণ শ্রীহনুমানজীর কৃপা ছাড়া- ‘হোত না আজ্ঞা বিনু পৈসারে’ — প্রভু শ্রীরামের প্রতি ভক্তি লাভ সষ্ভব নয়। তাহলে আমাদের সবার আগে জানা দরকার ‘সাধু’ কে?
‘সাধু’ বলতেই আমাদের মানসপটে গৈরিক বসনধারী জটাজুটধারী ব্যক্তির চেহারা ফুটে ওঠে, যার নিবাস যত্র তত্র অর্থাৎ সংসার বৈরাগী। আধ্যাছ্মিক মার্গের নিজ নিজ পন্থার মহাজনগণ এই ‘সাধু’ শব্দের বিভিন্ন অর্থ করেছেন। কিন্তু ভাগবত এবং অন্য শাস্ত্র এ কথা স্বীকার করেন না যে, যাঁরা গৃহস্থাশ্রম ত্যাগ করে বৈরাগ্যশ্রম গ্রহণ করেন ঢাঁরাই সাধু। যেমন-
‘শ্রীহদ্ভাগবত’ (নবহ স্কন্ধ)-এ মহারাজ অম্বরীষকে সাধু বলে মান্যাতা দিয়েছেন ‘স্বয়ং ভগবান নারায়ণ এবং এ কथा জানিয়েছেন দুর্বাসা মুনিকে। অর্থাৎ পৃথিবীপতি রাজাভ হতে পারেন সাধু। তাই মহান ‘বৈষ্ব-দার্লিনিক আচার্য শ্রীল শ্রীজীবগোস্বামীপাদ ‘সাধু’ শব্দের ব্যাখ্যায় লিখেছেন যে, সাধু কারা ?
তিনি বলছেন, ‘গৃহে, বনে, আশ্রহে, যে যেখানেই থাকুন, যাঁরা ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ, বাসনা নিঃশেযে ত্যাগ করে প্রেমভক্তিপরায়ণ হয়েছেন, তাঁরাই সাধু’। আর প্রেমভক্তিপরায়ণ ব্যক্তিকে সর্বদাই পথ দেখিয়ে নিয়ে চলেন শ্রীহননুমানজী। ‘নবধা’ ভক্তির আর বাকি কাজটা শ্রীহনুমানজী করে দেन।
এই চৌপাঈতে আরও বলা হয়েছে যে, শ্রীহনুমানজী রাক্ষদদের নিধনকারী এবং প্রভু শ্রীরামের প্রিয়পাত্র। আমরা সবাই জানি যে, প্রভু শ্রীরাম দঞুকবনে রাক্ষসদের নৃশংসতা দেখে এত বিচলিত হয়েছিলেন যে, তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তিনি সমস্ত রাক্ষসকুলকে ধ্বংস করবেন এবং তাঁর এই কাজে শ্রীহনুমানজী যোগ্য সহযোগিতা করেছিলেন। তাই তিনি প্রভু শ্রীরামের অন্য অনেক কারণের মধ্যে এই কারণেও যে প্রিয় হবেন, তা তো বলাই বাহল্য।
কিন্তু যখন ‘সাধু সন্ত কে তুম রখবারে’ এই বিশেষণটির সঙ্গে তাঁকে জুড়ে দেওয়া হয়, তখন এর এক অন্য অর্থ আমাদের সামনে উঠে আসে যা আমাদের সাংসারিক জীবের পক্ষে পথ-প্রদর্শক স্বরূপ। ‘অসুর নিকন্দন’ অর্থাৎ কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ্, মাৎসর্য ইত্যাদি আসুরিক বৃত্তিগুলি যে নির্মূল করার প্রয়াস করবে, সেই সাধু বা সাধক সর্বদাই ‘রামদুলারে’ হবেন আর শ্রীহনুমানজী তাঁকে অবশ্যই রক্ষা করবেন তাঁর অভীষ্ট লাভের জন্য।