Devotees around the world recite the Hanuman Chalisa in English with deep reverence.
Hanuman Chalisa Chaupai 31 in Bengali with Meaning & Analysis
অষ্ট সিদ্ধি নৌ নিধি কে দাতা।
অস বর দীन জাनকী মাতা।
সারানুবাদ : মাতা জানকীদেবী আপনাকে এইরূপ বর দিয়েছেন যে আপনি ইচ্ছা করলেই অষ্টসিদ্ধি (আট থ্রকার সিদ্ধি) এবং নয় প্রকার সম্পদ দান করতে পারেন।
ব্যাখ্যা : একজন যোগসিদ্ধ পুরুষ যিনি কুণুলিনী যোগসাধনার শীর্ষে পোঁছেছেন, তিনি স্বভাবতই অষ্টসিদ্ধির মালিক হন। এই আট প্রকার সিদ্ধি সাধনার বিভিন্ন স্তরে যোগীর প্রথতে অনুভবে এবং পরে কার্যকারিতার রূপ নেয়। এই আট প্রকার সিদ্ধি যোগীপুরएষ শ্রীহনুমানজী তাঁর যৌবন অবস্থাতেই কঠোর যোগসাধনায় পেয়েছিলেন।
ভগবান শঙ্করের কৃপাতেই এই সিদ্ধিগুলি পাওয়া যায় আর শ্রীহনুমানজী হলেন স্বয়ং রুদ্র অবতার। শ্রীহনুমানজী, প্রভু ত্রীরামের নরলীলায় তাঁর যোগ্য সহায়ক হয়ে, তাঁর সেবাধর্ম পালনের পথে এই সিদ্ধিগুলির প্রয়োগও করেছিলেন। শ্রীহনুমানজীর কাজে লাগা এই যৌগিক শক্তিগুলি এই রকম :
নয় निधि
নয়া প্রকারের দৈবী সম্পদ আছছ। শাস্ককরগণ এই নয় निধির আনেক রকম অর্থ করেছেন যার মব্যে (ক) ভূমি বা সাগরের গভীর ৫েকে বা গাছপালা থেকে পাওয়া নয় সম্পদ ; (খ) নবধা ভক্তি।
ভূমি, সাগর বা বনস্পতি থেকে পাওয়া নয় নিধি এইরকসম : (১) পদ্ম, (২) মহাপদ্ম, (৩) শঙ্য, (৪) মকর, (৫) কচ্ছপ, (৬) মুকুন্দ (মূল্যবান রত্ন), (৭) কুন্দ (মূল্যবান ধাতু), (৮) নীল (নীলরড্ন), (৯) থর্ব।
নবধা ভক্তি : ভক্তি যাজনের নয়টি অঙ্গ: (১) শ্রবণম্ (২) কীর্তনম্ (৩)
বিষ্ণু শ্ররণম্ (৪) পাদসেবনম্ (৫) অর্চনম্ (৬) বন্দনম্ (৭) সখ্যম্ (৮) দাস্যম্ (৯) আত্ম-নিবেদনম্।
সামাজিক দৃষ্টিতে নিচের বিষয়গুলিকেও নয় নিধি রূপে মানা হয়-
(১) ধন (২) সম্পতি (৩) রাজ্যসুখ (৪) মান (৫) প্রতিষ্ঠা (৬) সমৃদ্ধি (৭) রত্ম (৮) সুন্দরী এবং প্রিয়তমা পত্নী (৯) প্রমপূর্ণ পরিবার।
এখানে একটা প্রশ্ন উঠতে পারে এই সিদ্ধি বা নিধি যদি কেবলমাত্র যোগের
(তা সে রাজযোগ বা ক্রিয়াযোগ বা অষ্টাঙ্যোগের পূর্ণতর রূপ হোক) সর্বোক্তম অবস্থার সাধ্য হয়, তাহলে শ্রীহনুমানজী শুধু কি ঝষি, যোগীদেরই এই শক্তি দান করতে পারেন, অন্য কাউকেই নয়? মাতা জানকী শ্রীহনুমানজীকে বর দিয়েছিলেন যে, এই শক্তি তিনি যাকে উপযুক্ত মনে করবেন তাকেই দান করতে পারবেন।
বিভিন্ন সাধনপথের প্রায় সবাই শ্রীহনুমানজীর কৃপাপ্রত্যাশী। শ্রীহনুমানজী তাঁর ভক্তদের সাধনপথের উত্তরণের অবস্থা অনুযায়ী এবং সাধকের মানসিক আকাক্ষা অনুসারে এই শক্তির উপযোগ করেন। যেমন, যোগবিদ্যার গ্রন্থসমূহের মতে আধ্যাছ্মিক ক্ষেত্রে সিদ্ধ মহাপুরুষদের মধ্যে এমন কিছু লক্ষণ যুক্ত হয় যা অন্য সাধনায় থুব একটা লক্ষ্য করা যায় না, যার গণনা অষ্টসিদ্ধির মধ্যে পড়ে।
আবার অন্য সাধন পথে এমন কিছু নিধির লক্ষণ আমরা সাধক/সাধকের পরিবারের মধ্যে দেখি যার সংস্ষিপু পরিচয় আমাদের করিয়েছেন বিদ্বান কবি ভর্তৃহরি চাঁর রচনা ‘নীতিশতক’-এ। রাজা ভ্তৃহরি পরবর্তী জীবনে বৈরাগ্যের পথ অবলম্বন করেছিলেন।
তিনি লিখছেন (নিধিগুলি এইরকম) :-
- চরিত্রবান সন্তান,
- প্রিয়ত্মা পত্লী,
- স্নেহপণর হিত্র,
- শ্রসন্নমুখ স্থির বৈভব,
- বিদ্যার তেজোদীপু চেহারা।
এই নয় ক্রকার নিধি শ্রীহরি সক্তষ্ট হয়ে চাঁর ভক্তর সাংসারিক কষ্ট দূর করার জন্য দান করেন। এইবার আসুন আমরা এই চৌপাঈটিকে একটু অন্যাভাবে বুঝি।
অষ্টসিদ্ধি আর নয় নিধির দাতা কে হতে পারেন? কে আবার-প্রভু শ্রীরাম। শ্রীরাম শ্রীহনুমানজীকে বর দিলেন যে, “হে প্রিয় হনুমান, তোমার সেবা, অনুগ্রহ, সঙ্কটহরণের সর্বদা প্রয়াসের ঋণ আমি কোনোদিন শোধ করতে পারবো না। আমার এই প্রসন্ন মন তোমাকে তাই বর দিচ্ছে যে দেবী জানকী তোমার মাতা হউন।”–‘অসবর দীন জানকী মাতা’।
ব্যস, আবার কি! সীতাজী মাতা হলে, স্বাভাবিকভাবেই প্রভু শ্রীরাম পিতা হলেন। আর তার সাথে সাথেই প্রভুর বস্ত্র, সিদ্ধি, নিধি, ইত্যাদি সব শ্রীহনুমানজীর হয়ে গেলো। ত্রীহনুমানজী তাঁর সিদ্ধির উপযোগ সর্বদা রামভক্তদের প্রেরণা, মার্গদর্শন, শক্তি, ধৈর্য এবং শ্রেয়র জন্যই করেন। যে বিরাট রামকাজের দায়িত্ব নিয়ে তিনি এসেছেন, এতো তারই অঙ্গ।